করোনাকালীন বাস্তব অভিজ্ঞতাকে ঘিরে নির্মিত ‘জয়া আর শারমীন’ সিনেমা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জয়া আহসানের মা রেহানা মাসউদ। গতকাল শনিবার ঢাকায় আয়োজিত সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
সিনেমা শেষ হলে করতালির মাঝে নীরবে চোখ মুছছিলেন এই মা। তাঁর পাশে ছিলেন দুই মেয়ে, এক জন অভিনেত্রী জয়া আহসান। সিনেমা শেষে যখন জয়ার মায়ের কাছে অনুভূতি জানতে চাওয়া হয়, কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি বলেন, ‘কি আর অভিনয় করল মেয়ে।’
বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন
‘জয়া আর শারমীন’ সিনেমায় করোনাকালীন এক তারকার ঘরবন্দী জীবন এবং গৃহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা উঠে এসেছে। এসব অভিজ্ঞতা জয়ার মা নিজের চোখেই দেখেছেন। তিনি বলেন, “মেয়ে ও শারমীন দুজনেরই অভিনয় ভালো লেগেছে। দুজনই অসাধারণ। এটা শুধু অভিনয় না, সত্যিকারের ঘটনা। করোনার সময় আমরা যা যা পার করেছি, সবই যেন ফিরে এল চোখের সামনে।”
তিনি আরও জানান, করোনার সময় তিনি নিজে এক মাস হাসপাতালে ছিলেন। আর জয়া ঘরবন্দী ছিলেন অসুস্থ হয়ে। বাড়ির ভেতরে তখন ভয় আর সতর্কতার পরিবেশ ছিল। “জয়া একটা ঘরে থাকত। তার খাবার ওয়ান টাইম প্লেটে দরজার সামনে দিয়ে আসতাম। একে অপরের থেকে দূরে থাকলেও মনের দূরত্ব যেন আরও কাছে এনে দিয়েছিল আমাদের,” বলেন তিনি।
সিনেমার চরিত্র ও প্রেক্ষাপট
পিপলু আর খান পরিচালিত সিনেমাটিতে জয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান নিজেই। আর তাঁর গৃহকর্মী শারমীনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মহসিনা আক্তার। সিনেমাটি মুক্তির প্রথম দিন থেকেই আলোচনায় উঠে আসে।
মহামারি করোনার সময় মানুষের মধ্যে যে ভীতি, নিঃসঙ্গতা, সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল, সেই বাস্তবতা খুব নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে ছবিটিতে।
জয়া আহসানের মা বলেন, “সিনেমায় দেখানো কাহিনি শুধু আমাদের না, অনেক পরিবারের গল্প। সেই দিনগুলোর কথা মনে করে আজও চোখে পানি আসে। সিনেমাটি দেখার সময় মনে হয়েছে, আমি যেন নিজের জীবনের একটা অধ্যায় আবার দেখছি।”
দ্বিতীয়বার দেখার আকাঙ্ক্ষা
জয়ার মা জানালেন, তিনি সিনেমাটি প্রথম দিনই দেখে ফেলেন। তবে মেয়ের প্রতি ভালোবাসা আর গল্পের টান আবারও তাঁকে নিয়ে আসে দ্বিতীয় প্রদর্শনীতে। “মেয়ের অনেক সিনেমাই একাধিকবার দেখেছি, এটা আরও কয়েকবার দেখতে ইচ্ছা করছে,” বলেন তিনি।
‘জয়া আর শারমীন’ সিনেমাটি শুধু একটি চরিত্রনির্ভর গল্প নয়, বরং এক নিঃশব্দ সংকটকালীন সময়ের দলিল হয়ে উঠেছে—যেখানে বাস্তব আর কল্পনার ফারাকটা প্রায় মুছে গেছে।