গ্রীষ্ম এলেই বাজারে দেখা মেলে রসালো ফল লিচুর। রাজধানী ঢাকার বাজারগুলোতেও শুরু হয়েছে লিচুর আগমন। কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ বেশ কয়েকটি বাজারে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জাতের লিচু। তবে এখনো বেশির ভাগ লিচুই পুরোপুরি পাকেনি, ফলে স্বাদে ঘাটতি থাকলেও চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট।
প্রথম দিকের এই লিচুগুলোর মধ্যে আছে মাদ্রাজি, বোম্বাই, চায়না-থ্রি এবং দেলওয়ারি জাতের লিচু। এগুলোর বেশিরভাগই আকারে কিছুটা ছোট, খোসা সবুজাভ এবং স্বাদে কিছুটা টক। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ভালো দামে বিক্রি করতে অনেক বাগানমালিক পরিপক্ব হওয়ার আগেই লিচু তুলে ফেলছেন।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আবদুল মোমিন বলছেন, ‘এই মুহূর্তে দিনে পাঁচ থেকে ছয় হাজার লিচু বিক্রি করছি। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে বড় ও মিষ্টি লিচু আসবে বাজারে, তখন বিক্রি ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।’
ক্রেতারাও লিচুর স্বাদ নিয়ে কিছুটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। মগবাজারের বাসিন্দা আবেদ মাহমুদ ৩৫০ টাকায় ১০০টি রাজশাহীর বোম্বাই জাতের লিচু কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘এখন খুব মিষ্টি না হলেও বাসার ছোট মেয়ে আর মা খেতে চেয়েছে, তাই নিয়েছি।’
লিচুর দাম ও জাতভেদে ভিন্নতা রয়েছে। মাদ্রাজি, বোম্বাই এবং চায়না-থ্রি জাতের লিচু আসছে রাজশাহী, যশোর ও দিনাজপুর থেকে। এদের মধ্যে চায়না-থ্রি জাতের লিচুর দাম সবচেয়ে বেশি—১০০টির দাম ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই লিচু আকারে বড়, গোলাকার এবং শ্বাস পুরু হয়। খেতে অত্যন্ত মিষ্টি এবং খোসা তুলনামূলকভাবে কম ধারালো।
দেলওয়ারি জাতের লিচু পাওয়া যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও পাবনার ঈশ্বরদী এলাকা থেকে। মাঝারি আকারের এই লিচুর বাইরের খোসা কিছুটা ধারালো হয়। ১০০টি দেলওয়ারি জাতের লিচুর দাম ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
কদম জাতের লিচুও এসেছে বাজারে, যা নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই লিচু গুলো সাধারণত শ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে—৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে।
দিনাজপুরের লিচু এখনও পুরোপুরি আসেনি। মৌসুমের শেষ দিকে এই এলাকার লিচু বাজারে আসে। তবে বাজারে এখন যে চায়না-থ্রি পাওয়া যাচ্ছে, সেটিকে অনেকেই দিনাজপুরের লিচু বলে বিক্রি করছেন। দিনাজপুরের লিচু তার মিষ্টি স্বাদ ও পুরু শ্বাসের জন্য খুবই জনপ্রিয়।
লিচুর মৌসুম চলবে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। তাই এখনই বাজারে গিয়ে যাচাই করে কিনলে পাওয়া যাবে তাজা ও নানা জাতের লিচু। তবে এক সপ্তাহ পর থেকে স্বাদে ও গুণে আরও উন্নত লিচু বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।