বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ডিজিটাল রূপান্তর, জলবায়ু সহনশীলতা ও আঞ্চলিক সংযোগ

News Desk

বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ডিজিটাল রূপান্তর, জলবায়ু সহনশীলতা ও আঞ্চলিক সংযোগ.Dhakainlight.coma

ইতালির মিলানে অনুষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)–এর ৫৮তম বার্ষিক সভায় বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের পথরেখা হিসেবে ডিজিটাল রূপান্তর, জলবায়ু সহনশীলতা এবং আঞ্চলিক সংযোগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

সভায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেবল অর্থায়ন নয়, কাঠামোগত সংস্কার ও দীর্ঘমেয়াদি সক্ষমতা গঠনের ক্ষেত্রে এডিবির ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি চারটি খাতে বিশেষ অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন—

ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি: অবকাঠামো নির্মাণ, ই-গভর্ন্যান্স এবং ডিজিটাল শিক্ষার সম্প্রসারণের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।

জলবায়ু কার্যক্রম: নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার, জলবায়ুবান্ধব কৃষি এবং উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা।

আঞ্চলিক সংযোগ: দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য, জ্বালানি এবং পরিষেবা খাতে আন্তসীমান্ত বিনিয়োগ ও সহযোগিতা জোরদার করা।

টেকসই অর্থায়ন: ঋণের ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নয়ন প্রয়োজন পূরণে উদ্ভাবনী অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আজকের বৈশ্বিক সংকট যেন আগামী দিনের সম্ভাবনায় পরিণত হয়, তার জন্য প্রয়োজন সাহসী চিন্তাধারা ও অংশীদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা।’

সভায় এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া, আগামীর প্রস্তুতি’, যা বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টার মতে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও কার্যকর দিকনির্দেশনা।

এডিবির সভার পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)–এর সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হয়।

বৈঠকে জানানো হয়, গত ৫০ বছরে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে প্রায় ৩১৯ কোটি মার্কিন ডলার উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা, মানবিক সহায়তা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির অগ্রাধিকার লক্ষ্যগুলোতে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কৌশলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বাণিজ্য, এসএমই উন্নয়ন, ডিজিটাল প্রশাসন ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের আগ্রহের কথাও জানানো হয়।

বাংলাদেশ এই প্রসঙ্গে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ, কারিগরি প্রশিক্ষণ, নদী পুনরুদ্ধার, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, সাইবার নিরাপত্তা এবং যৌথ গবেষণায় সহযোগিতার আহ্বান জানায়।

সামগ্রিকভাবে, বাংলাদেশের অবস্থান ছিল স্পষ্ট—টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রযুক্তিনির্ভর, সবুজ ও সমন্বিত পথেই এগিয়ে যেতে চায় দেশটি।

Leave a Comment

Footer Section