বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পরিচালক হিসেবে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল এবং আমিনুল ইসলামকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—এই মর্মে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম পরিচালনায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশও দিয়েছেন আদালত। ফলে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ, যার নেতৃত্বে আছেন আমিনুল ইসলাম, তাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির আইনজীবী।
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামকে বিসিবির পরিচালক মনোনীত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেন বিসিবির সদ্য সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
গত ২৯ মে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বিসিবিতে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করে। পরদিন, ৩০ মে, আমিনুল ইসলামকে বিসিবির পরিচালক হিসেবে মনোনীত করা হয়। রিটে এই সিদ্ধান্তগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে বলা হয়, এটি আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং অন্যান্য বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ফারুকের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় আমিনুল ইসলামকে বোর্ড সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন পরিচালকরা। এই নিয়োগ ও এর প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ফারুক আহমেদ।
গত রোববার ফারুক আহমেদ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। গতকাল সোমবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বেঞ্চে উপস্থাপনের স্বাধীনতা দেন রিটকারীকে। পরে আজকের বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য ওঠে এবং ২৫ নম্বর ক্রমিকে তালিকাভুক্ত হয়।
আদালতে ফারুক আহমেদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস এবং আইনজীবী এ কে এম আজাদ হোসেন। এনএসসির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, বিসিবির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান এবং আমিনুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম।
আদেশের পর ফারুক আহমেদের আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস জানান, আদালত রুল জারির পাশাপাশি স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ বর্তমানে যারা বিসিবির দায়িত্বে আছেন, তারা থাকবেন এবং তাদের বর্তমান অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন অব্যাহত থাকবে।
বিসিবির আইনজীবী মাহিন এম রহমান বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে কাজ চালিয়ে যাবে। বর্তমানে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে নয়জন সদস্য রয়েছেন।
এই রুল ও স্থিতাবস্থা আদেশ বিসিবির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন মোড় তৈরি করেছে। এখন প্রশ্ন উঠছে—ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল এবং আমিনুল ইসলামের নিয়োগের পেছনে প্রকৃত কারণ কী? রুলের জবাব এবং চূড়ান্ত শুনানিতে হয়তো তা স্পষ্ট হবে।