প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অসন্তুষ্ট বিএনপি: মির্জা ফখরুল

News Desk

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

বুধবার প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ উপস্থাপন করেননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা বলেছেন। অথচ আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, ডিসেম্বরই নির্বাচনের সর্বোচ্চ সময়সীমা।”

তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে বিস্তারিত আলোচনা করে বিএনপি পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

বৈঠকে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

এর আগে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেন, “গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে গিয়ে যদি উল্টো পথে চলার চেষ্টা করা হয়, সেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাওয়ার পরও সেটি পিছিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া একটি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “যে ভোটাধিকারের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে, আন্দোলন করেছে, সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে আপত্তি কোথায়? কাদের সুবিধার্থে ডিসেম্বর থেকে জুনে নির্বাচনের প্রস্তাব আসছে? কেন অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে?”

এ বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠকে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে দলীয় কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ, প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কারকে অজুহাত বানিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। দলটি দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে, দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের আয়োজন করা হোক। এই দাবিতে বিএনপির সমমনা রাজনৈতিক জোটগুলোর পাশাপাশি কিছু বামপন্থি দলও একমত।

অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী, নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং আরও কয়েকটি ইসলামী দল বিপরীত অবস্থানে রয়েছে। তাদের দাবি, আগে বড় পরিসরে সংস্কার, তারপর নির্বাচন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা কখনো ডিসেম্বরে, কখনো জুনে নির্বাচনের কথা বলছেন। আবার কেউ বলছেন, এই সরকার আরও পাঁচ বছর থাকতে পারে। কেউ বলছেন, তারা নির্বাচিত। এমনকি সরকারের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি বলেছেন, গণতন্ত্রের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার তৈরি হয়! এইসব পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এতে নির্বাচন নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে।”

এদিকে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে দুপুর ৩টায় বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৩ মার্চ কমিশনে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর এটি হবে দ্বিতীয় দফা আলোচনা।

এর আগে ৬ মার্চ ঐকমত্য কমিশন ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে সংস্কার-সংক্রান্ত ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে মতামত চেয়ে ছক আকারে একটি ‘স্প্রেড শিট’ পাঠিয়েছিল।

ঢাকা ইন লাইট ডট কম

Leave a Comment

Footer Section