পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতন নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) উচ্চ বেতনের বিষয়টি আলোচনায় আসার একদিন পরেই এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এই নির্দেশ দেন। আজ বুধবার বিদ্যুৎ বিভাগ বিসিপিসিএলের কাছে পাঠানো এক তাগিদপত্রে উল্লেখ করে, টপ ম্যানেজমেন্ট—ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) ও গ্রেড-২–এর কর্মকর্তাদের বেতন সরকারি ইউনিফাইড সার্ভিস রুলস অনুযায়ী সংশোধন করে দ্রুত বিভাগকে অবহিত করতে হবে।
এর আগে গতকাল প্রথম আলো পত্রিকায় ‘পায়রায় তিন গুণ বেতন নিয়ে প্রশ্ন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বিসিপিসিএলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অস্বাভাবিক বেতন কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
২০১৬ সালে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর সময় সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর নির্ধারিত বেতন কাঠামোই অনুসরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের একটি বোর্ড সভায় শীর্ষ কর্মকর্তাদের বেতন কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর ২০২০ সাল থেকে এটি কার্যকর হয়।
নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মূল বেতন ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭ লাখ টাকা করা হয়। ভাতা যোগ করে মোট বেতন দাঁড়ায় প্রায় ১৫ লাখ টাকা। গ্রেড-২ কর্মকর্তার বেতন দাঁড়ায় প্রায় ৯ লাখ টাকা। তবে মধ্যম ও নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়েনি বা সামান্য পরিমাণে বেড়েছে।
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এর ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় ইউনিট চালু হয় একই বছরের ২৬ আগস্ট। চালুর পর থেকে এই কেন্দ্রের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে নেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
বেতন বৈষম্য ও আর্থিক স্বচ্ছতার প্রশ্নে সরকারি নজরদারি আরও বাড়ানো হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
আরও বিশ্লেষণধর্মী বা অনুসন্ধানী কনটেন্ট চাইলে জানাবেন।