পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম এখন ‘জুলাই–৩৬ ছাত্রীনিবাস’

News Desk

পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম এখন ‘জুলাই–৩৬ ছাত্রীনিবাস’. Dhakainlight.com

পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘জুলাই–৩৬ ছাত্রীনিবাস’। একইসঙ্গে আরও দুটি ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এ পরিবর্তন নিয়ে পাবনার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ও সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ ও ক্ষোভের স্রোত বইছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল মিয়া নাম পরিবর্তন করা তিনটি নিবাসের নতুন নামফলক উদ্বোধন করেন। উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ আবদুল খালেক, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

নাম পরিবর্তিত অন্য দুটি হল হলো: শেখ রাসেল ছাত্রাবাসের নতুন নাম ‘বিজয়-২৪’ ছাত্রবাস এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাসের নতুন নাম ‘আয়শা সিদ্দিকা (রা.) ছাত্রীনিবাস’।

সুচিত্রা সেনের নামে থাকা ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তনে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তার ভক্ত ও সংস্কৃতি অনুরাগীরা। কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীর পৈতৃক বাড়ি পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনে অবস্থিত।

পাবনা ড্রামা সার্কেলের সাবেক সভাপতি এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংস্কৃতিক সংগঠক গোপাল সান্যাল ফেসবুকে লিখেছেন, “সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পাল্টে দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাবনার সংস্কৃতিপ্রেমী জনতা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করবে।”

সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি ও সাংস্কৃতিক সংগঠক জাকির হোসেন বলেন, “সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা। তাঁর কোনো রাজনৈতিক সংশ্লেষ নেই। তাঁর নামটি পরিবর্তনের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নরেশ মধু বলেন, “সুচিত্রা সেন কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন, বরং ভালোবাসা ও আবেগের প্রতীক। তাঁর নাম মুছে ফেলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই ও পূর্বের নাম পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি।”

নাম পরিবর্তনের বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল মিয়া বলেন, “জুলাই বিপ্লব–পরবর্তী প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে এবং একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আমরা আশা করি, শিক্ষার্থীরা জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা, দেশপ্রেম ও দক্ষতা অর্জনের দিকে অগ্রসর হবে।”

সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়িটি ১৯৬০ সালে তাঁর বাবা প্রশাসনের কাছে ভাড়া দেন। ২০০৯ সালে পাবনার মানুষ বাড়িটি দখলমুক্ত করতে আন্দোলনে নামেন এবং ২০১৪ সালে বাড়িটি পুনরুদ্ধার হয়। বর্তমানে সেটি পাবনা জেলা প্রশাসনের অধীনে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সুচিত্রা সেনের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের নাম ছাত্রীনিবাস থেকে মুছে ফেলা নিয়ে পাবনার সংস্কৃতিমনা জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে।

4o

Leave a Comment

Footer Section