পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিন্দুরে’ ভারতের শতাধিক সন্ত্রাসবাদী হত্যার দাবি

News Desk

পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিন্দুরে’ ভারতের শতাধিক সন্ত্রাসবাদী হত্যার দাবি. Dhakainlight.com

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গত কয়েক দিন ধরে চলতে থাকা উত্তেজনা এবং গোলাগুলির মধ্যে ভারতের পক্ষ থেকে একটি বড় দাবি উঠেছে। ভারত বলছে, পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে তাদের পরিচালিত ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযানে শতাধিক সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছে।

ভারতের সামরিক কার্যক্রমের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই রবিবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, পাকিস্তানের নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে ছিল লস্কর-ই-তৈয়বা সংগঠনের ঘাঁটি।

রাজীব ঘাই আরও জানান, “আমরা লস্কর-ই-তৈয়বা সদস্যদের পুরোপুরি অপ্রস্তুত অবস্থায় ধরেছিলাম।” তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি ভারত সরকারের কাছে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে পরিচিত এবং কাশ্মিরে একাধিক হামলার জন্য এটি দায়ী।

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বর্তমানে অনেক বেশি তীব্র। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এই উত্তেজনা তীব্র হয় ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর, যা দুই দেশের মধ্যে সামরিক এবং কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়ে দেয়।

পাকিস্তানকে হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করে ভারত, কিন্তু ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে। এরপরে দুই দেশ একে অপরের কূটনীতিক এবং নাগরিকদের বহিষ্কার করতে শুরু করে এবং সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করে দেয়। এরপর ভারত ৬ মে দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়।

তবে, যুদ্ধবিরতির চুক্তির পর, ১৩ মে উভয় দেশ একে অপরের সামরিক তৎপরতা বন্ধ করার সম্মতিতে পৌঁছেছে, যার মাধ্যমে তারা স্থল, জল এবং আকাশপথে সমস্ত সামরিক তৎপরতা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভারতের দাবি, গত কয়েকদিনের লড়াইয়ে অন্তত ৩৫-৪০ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে, অন্যদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের পাল্টা হামলায় ৪০-৫০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছেন, পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর পাল্টা হামলায় ৪০-৫০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে।

এদিকে, ভারতীয় এয়ার মার্শাল এ.কে. ভারতী জানান, পাকিস্তান থেকে আসা একাধিক ড্রোন অনুপ্রবেশ ব্যর্থ করা হয়েছে, এবং পাকিস্তানী বিমান ঘাঁটিতে আরও বিমান হামলা চালানো হয়েছে।

তবে, যুদ্ধবিরতির পরও সহিংসতা কিছুটা কমলেও, কাশ্মির এবং অন্যান্য অঞ্চলে নতুন করে গোলাগুলি এবং ড্রোনের উপস্থিতি দেখা গেছে। স্থানীয়রা আবারও আতঙ্কের মধ্যে জীবনযাপন করছেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এসেছে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা নিয়ে, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির খবর প্রকাশ করেন, এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এটি স্বাগত জানিয়েছেন, যা শান্তি প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তবে, পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত, এবং আগামী দিনে উভয় দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Footer Section