রাজধানীর পল্লবীতে মেট্রো স্টেশনের নিচের ফুটপাতে চলন্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে থামিয়ে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে আইফোন ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে। ছিনতাইয়ের পুরো দৃশ্য ধরা পড়ে আশপাশের একটি সিসিটিভি ক্যামেরায়।
ভুক্তভোগীর নাম আল-আমিন রানা। তিনি রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং থাকেন পল্লবীতে। ওই দিন রাতে খিলক্ষেত থেকে বাসে করে মিরপুর পল্লবী মেট্রো স্টেশনের কাছে নামেন। বাসা পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার সময় তিন ছিনতাইকারী তার পথ রোধ করে এবং একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার হাতে ও পায়ে আঘাত করে মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা দ্রুত একটি অটোরিকশায় পালিয়ে যায়।
আল-আমিন জানিয়েছেন, ঘটনার পর পরই তিনি পল্লবী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু কোনো ধরনের সহায়তা পাননি। থানা থেকে একটি উপপরিদর্শকের (এসআই) নম্বর দেওয়া হয়, যিনি নাকি মামলাটি তদন্ত করবেন। তার নাম জয় দাশ। কিন্তু অভিযোগ দেওয়ার পর কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানান তিনি।
পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী নিজেই স্থানীয় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা থানায় জমা দেন। আজ সোমবার সকালেও এসআই জয় দাশের সঙ্গে ফোনে কথা হয় আল-আমিনের। এসআই তাকে আশ্বস্ত করেন যে তিনি ঘটনাস্থলে আসছেন। কিন্তু পুলিশি পদক্ষেপের বিষয়ে এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই জয় দাশ বলেন, পল্লবী একটি জনবহুল এলাকা এবং সেখানে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তিনি দাবি করেন, ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সম্পর্কে আগে জানতেন না এবং খোঁজ নিচ্ছেন।
পল্লবী থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম বলেন, তিনি থানায় সদ্য যোগ দিয়েছেন এবং এখনো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। তবে তিনি দ্রুত খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানান।
এই ঘটনায় রাজধানীতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ব্যস্ত সড়কে এমন দুঃসাহসিক ছিনতাই, আবার সেটি ভিডিওর মাধ্যমে জনসমক্ষে চলে আসা এবং তারপরও পুলিশের নির্লিপ্ত ভূমিকা সাধারণ নাগরিকদের মনে ভয় ও হতাশা তৈরি করেছে। ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক এবং এমন ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বহীনতা বন্ধ হোক।