সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনই ঘোষণা করা উচিত। আজ মঙ্গলবার সিপিডির তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন অর্থনৈতিক পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগে আগ্রহী হন, যদি দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকে। আর এ স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে। তাঁর মতে, “সেটা ডিসেম্বর, জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারি—যেটাই হোক, একটা নির্দিষ্ট তারিখ এখনই জানানো দরকার। তাহলে বিনিয়োগকারীরা পরিকল্পনা করতে পারবেন।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অনেকে ভাবেন নির্বাচন হয়ে গেলেই প্রবৃদ্ধি শুরু হবে, বাস্তবে তা নয়। প্রবৃদ্ধির জন্য চাই কাঠামোগত সংস্কার। ব্যাংকিং খাত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), গ্যাস সরবরাহ—সব কিছুতেই পরিবর্তন দরকার।” তিনি বলেন, “বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানো কিংবা ডিজিটালাইজেশনের কাজ শুরু করার জন্য নির্বাচনের অপেক্ষা করতে হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন নিয়ে পুরোপুরি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে—এমনটি বলা যাবে না। কারণ ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত একটি সময়সীমা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মানে আগামী সাত থেকে তেরো মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেই ধরে নেওয়া যায়।”
সিপিডির এই বিশ্লেষণে মূলত দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক গতি, দারিদ্র্য ও বৈষম্যের প্রভাব, এবং সরকারের নীতি-নির্ধারণী কৌশলের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। বক্তারা মনে করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সংস্কারমুখী নীতি গ্রহণ না করলে শুধু নির্বাচন করেই কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তাঁদের মতে, একটি কার্যকর এবং সময়মতো নির্বাচন দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যদি তা হয় বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক এবং নিরপেক্ষভাবে।