নির্বাচনী নয়, ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিকেন্দ্রীকরণই এনসিপির মৌলিক সংস্কারের মূল বক্তব্য

News Desk

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ ঘোষণার পক্ষে এনসিপি, প্রাদেশিক সরকারে দ্বিমত. Dhakainlight.com

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনে করে, দেশের জন্য প্রয়োজন নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কারের বাইরেও একটি গভীর, কাঠামোগত রূপান্তর। আজ জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বর্ধিত আলোচনায় অংশ নিয়ে দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘মৌলিক সংস্কার বলতে শুধু নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে নয়, বরং ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহি এবং বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করাকেই আমরা মৌলিক সংস্কার বলে মনে করি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এই আলোচনার মাধ্যমে দেশজুড়ে রাজনৈতিক সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরির লক্ষ্যেই এগোচ্ছে এনসিপি। বৈঠকে দলটি তাদের মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে, যেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা, দলীয় প্রভাবমুক্ত নিয়োগ, ও এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতা কাঠামো ভাঙার বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়।

আলোচনার শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আখতার হোসেন বলেন, ‘গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মৌলিক পরিবর্তন। ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন, দলীয় নিয়োগ ও স্বৈরতান্ত্রিক ধাঁচের চর্চা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে সত্যিকারের সংস্কার সম্ভব নয়।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আগামী ১৫ মে’র মধ্যে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন করতে। এনসিপির দেওয়া প্রস্তাবনা আমাদের ভবিষ্যৎ সংলাপের ভিত্তি তৈরি করবে বলে মনে করি।’

আলোচনায় উঠে এসেছে যে, এনসিপি শুধু নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার নয়, বরং সম্পূর্ণ রাজনৈতিক-প্রশাসনিক কাঠামোর গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। তারা মনে করছে, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সাংবিধানিক পদে দলীয় প্রভাবমুক্ত নিয়োগ, প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ এবং শক্তিশালী জবাবদিহি ব্যবস্থাই মূল চাবিকাঠি।

এ দিনের আলোচনায় আগের বৈঠকে অসমাপ্ত থাকা বিষয়গুলোতেও ফিরে যাওয়া হয়, যেমন জনপ্রশাসন কাঠামোর স্বচ্ছতা, দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যকারিতা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত প্রশাসনিক কার্যক্রম।

এনসিপির পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার এবং জাবেদ রাসিন।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, এসব আলোচনা ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিক ও বিকেন্দ্রীকরণভিত্তিক রাষ্ট্র নির্মাণের পথে বাস্তব ভিত্তি তৈরি করবে।

Leave a Comment

Footer Section