দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পেট্রলবোমা নিক্ষেপের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে নিজ নিজ এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া দুই নেতা হলেন ঘোড়াঘাট উপজেলার চোপাগাড়ী গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম (৫০) এবং করঞ্জি দীঘিপাড়া গ্রামের দিলজার রহমান (৪৮)। আনোয়ারুল ইসলাম ঘোড়াঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং দিলজার রহমান একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক।
ঘোড়াঘাট থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাব্বির আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলাটিতে এ পর্যন্ত মোট ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বিকেলে ঘোড়াঘাট পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। তাঁদের হাতে ছিল লাঠি, রড, ধারালো অস্ত্র ও পেট্রলবোমা। আন্দোলনকারীদের ওপর পেট্রলবোমা ছোড়ার ঘটনাও ঘটে, যাতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আহত হন। বিশেষভাবে আন্দোলনের আয়োজক সহিদ শেখ ও তাঁর সঙ্গী মো. রাফিককে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।
এ ঘটনার প্রায় ২০ দিন পর, ২৪ আগস্ট ঘোড়াঘাট পৌর ছাত্রদলের সদস্য সহিদ শেখ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, পৌর কাউন্সিলর ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করা হয়।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানান, গ্রেপ্তারকৃত দুই নেতার বিরুদ্ধে তদন্তে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাঁদের শনিবার দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হবে।
ঘটনার তদন্ত ও মামলার অগ্রগতি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এই গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মামলাটি নতুন গতি পেতে পারে।