ঢাকায় দুই নারীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার: আপন দুই বোনকে হত্যা

News Desk

ঢাকায় দুই নারীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার: আপন দুই বোনকে হত্যা. Dhakainlight.com

, পুলিশের প্রাথমিক ধারণা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড

রাজধানী ঢাকার মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়া এলাকায় শুক্রবার রাতে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুই নারীর রক্তাক্ত মরদেহ। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা—এটি একটি ঠাণ্ডা মাথার হত্যাকাণ্ড। নিহত দুই নারী ছিলেন আপন বোন। তাঁদের নাম মরিয়ম বেগম (৬০) ও সুফিয়া বেগম (৫২)।

ঘটনাটি ঘটেছে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে। মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ রুমন ও তদন্ত কর্মকর্তা রাজিব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত দুই নারীর শরীরে আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। তাদের একজনের মাথা ও মুখমণ্ডলে গুরুতর জখম ছিল, এবং অন্যজনের শরীরে ছুরিকাঘাতের দাগ মিলেছে।

পুলিশ জানায়, ওই বাসায় মরিয়ম বেগম, তাঁর ছোট বোন সুফিয়া বেগম এবং মরিয়মের মেয়ে একসঙ্গে থাকতেন। ঘটনার সময় মরিয়মের মেয়ে বাসায় ছিলেন না। রাতের কোনো এক সময় বাসায় ফিরে এসে তিনি দেখেন দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তিনি আশপাশের প্রতিবেশীদের ডাকেন। পরে সবাই মিলে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং রক্তে ভেসে থাকা মরিয়ম ও সুফিয়ার মরদেহ দেখতে পান।

তড়িঘড়ি করে ৯৯৯–এ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই মিরপুর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা এই ঘটনা বিশ্বাস করতে পারছেন না।

মিরপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে বাসার ভেতরেই। শিলপাটা ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। মরিয়মের মেয়ে ছাড়া বাড়িতে অন্য কেউ ছিলেন না বলে জানা গেছে।”

পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। হত্যার পেছনে পারিবারিক বিরোধ, সম্পত্তি সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব কিংবা পূর্বপরিকল্পিত কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি, তবে পুলিশ বলছে, আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ এবং মরিয়মের মেয়ের জবানবন্দি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে।

দুই আপন বোনের এমন নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা জানান, মরিয়ম ও সুফিয়া দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বসবাস করছিলেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তাঁদের। এমন ঘটনার কোনো পূর্বাভাস কেউই পাননি।

এই জোড়া খুনের ঘটনায় রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা পুনরুদ্ধার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।

Leave a Comment

Footer Section