কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রোজারঘোনা এলাকা থেকে লুলুয়ান মারজান (২২) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার ভোর চারটার দিকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির একটি কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়—তাঁকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত মারজান পূর্ব সিকদারপাড়ার বাসিন্দা মীর কাশেমের মেয়ে। কয়েক মাস আগে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে আব্বাস উদ্দিন নামে এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেন তিনি। আব্বাস হ্নীলার মৌলভীবাজার রোজারঘোনা এলাকার বাসিন্দা।
মারজানের স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী আব্বাস উদ্দিন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে শারীরিক নির্যাতনের একপর্যায়ে মারজানকে হত্যা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে।
মারজানের মেজ বোন আফরোজা আক্তার বলেন, “আমার বোনকে যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করে আসছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁরা সবাই মিলে মারধর করে হত্যা করেছে। এখন তাঁরা বলছে, সে আত্মহত্যা করেছে।”
ঘটনার পর থেকে নিহত মারজানের স্বামী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সবাই পলাতক। তাঁদের কারও মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, “ভোরে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। এক কক্ষ থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সময় বাড়িতে স্বামীসহ পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
নিহতের পরিবার জানায়, তাঁরা এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অনেকে দাবি করছেন, ঘটনাটি নিছক আত্মহত্যা নয়, বরং যৌতুক-সংক্রান্ত সহিংসতারই একটি জঘন্য উদাহরণ।
পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।