জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ, অভিযোগ জাতীয় পার্টির

News Desk

জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ, অভিযোগ জাতীয় পার্টির. Dhakainlight.com

রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করতে চাইলেও তা গ্রহণ করেনি পুলিশ—এমন অভিযোগ করেছে দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে রংপুর কোতোয়ালি থানায় গিয়ে মামলা করতে চেয়েছিলেন জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মিলন চৌধুরী, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোকাম্মেল হক চৌধুরী, জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ আলীসহ আরও কয়েকজন নেতা-কর্মী। তবে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরেও মামলা রুজু না হওয়ায় তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

পরে সাংবাদিকদের সামনে মিলন চৌধুরী বলেন, দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে টার্গেট করে হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছিল। হামলার সময় বাড়িতে তিনি নিজেই উপস্থিত ছিলেন। ভিডিও ফুটেজে হামলাকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব, তাদের নামসহ এজাহার জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আরিফ হোসেন নামে একজন একটি এজাহার দাখিল করেছেন। সেটি আমরা অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছি। তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ মামলার বিষয়ে ওপর মহলের কোনো চাপ আছে কি না—এই প্রশ্নে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

হামলার প্রতিবাদে আজ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে জাতীয় পার্টি। গতকাল রাজধানীর কাকরাইল পার্টি কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর নগরের সেনপাড়ায় অবস্থিত দ্য স্কাই ভিউ নামের ভবনে অবস্থিত জি এম কাদেরের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা বাড়ির জানালার কাচ ভাঙচুর করে এবং একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ আলী বাদী হয়ে থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এজাহার জমা দেন। এজাহারে বলা হয়, হামলাকারীরা অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করে এলাকাজুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে।

জাতীয় পার্টি দাবি করেছে, এই হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। তবে ওই দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিল, উল্টো তাদের ওপরেই প্রথমে হামলা চালানো হয়।

জাতীয় ছাত্র সমাজের নেতা আরিফ আলী বলেন, ‘ঘটনার সময় প্রশাসন উপস্থিত ছিল। কিন্তু হামলা ঠেকাতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং এখন থানায় মামলা করতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটি শুধু ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞা নয়, বরং রাজনীতিতে একপাক্ষিক সুবিধা দেওয়ার প্রমাণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পুলিশ কর্মকর্তার কাছে এক ঘণ্টা বসেছিলাম। ওসি বারবার ফোন করে উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে কথা বলে শেষে বলেন, “আমি মামলা নিতে পারব না। আপনারা কোর্টে যান।” এ ধরনের আচরণ পূর্বের সরকার আমলেও দেখেছি, এখনো অব্যাহত রয়েছে।’

আজ শনিবার বিকেল ৩টায় রংপুরের সেন্ট্রাল রোডে জাতীয় পার্টির জেলা ও মহানগর কমিটির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে। একই সঙ্গে সারা দেশেই দলটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানানো হয়েছে। জি এম কাদের ঢাকায় ফিরে দলের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেবেন বলেও জানা গেছে।

Footer Section