রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক লাভলু মিয়া হত্যাকাণ্ডের মামলায় জামিনে মুক্ত হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন মামলার আসামি জাহিদুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার রংপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে মানিক বাহিনীর পক্ষ নিয়ে লাভলু মিয়াকে ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী’ বলে দাবি করেন জাহিদুল। তবে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনার সময় লাভলু মিয়া ছিলেন নিরস্ত্র এবং তাকেই চাপাতি ও ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়।
জাহিদুল ইসলাম মামলার ৭ নম্বর আসামি। তিনি দাবি করেন, তাঁর দোকানে হামলা ও ভাঙচুরের জেরে ৫ এপ্রিল মানববন্ধনের আয়োজন করেছিলেন। সেই মানববন্ধনে বাধা দিতেই সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকারের নির্দেশে লাভলু মিয়াসহ কয়েকজন তাঁর দোকানে হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদুল বলেন, দোকান ভাড়া নিয়ে বিরোধের কারণে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে হামলা হয়। তিনি কালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা সারোয়ান জাহানের সহায়তা চেয়েছিলেন। জাহিদুল শহিদুল হককে ‘ব্যবসায়ীদের দুঃসময়ের সাথী’ হিসেবেও উল্লেখ করেন।
তবে জাহিদুলের বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতা মেলে না। ঘটনার দিনকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, নিরস্ত্র অবস্থায় লাভলু মিয়াকে একদল সন্ত্রাসী চাপাতি ও ছুরি দিয়ে কোপাচ্ছে। আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
লাভলু মিয়ার ছেলে ও মামলার বাদী রায়হান কবির বলেন, সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবাকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে অপবাদ দেওয়ায় তাঁরা অত্যন্ত মর্মাহত। তিনি অভিযোগ করেন, জামিনে মুক্ত হওয়ার পর আসামিরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করছে।
রায়হান আরও বলেন, হামলার পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে কালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক ও তাঁর ছেলে তমাল। মামলার প্রধান আসামিও শহিদুল হক। গত ২৭ এপ্রিল তিনি, তাঁর ছেলে এবং আরও সাতজন হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন।
এই বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, হুমকি বা ভয়ভীতির অভিযোগ পেলে বাদীকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে মানিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে নানা অপকর্ম করে এলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
আরও তথ্য বা অনুসন্ধান দরকার হলে জানাবেন।