জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন

News Desk

জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন. Dhakainlight.com

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম দীর্ঘদিন পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আজ বুধবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে তিনি রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান। মুক্তির সময় তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজহারুল ইসলাম আপিল বিভাগের রায়ে গতকাল খালাস পেয়েছেন। সেই রায়ের অনুলিপি রাতেই কারাগারে পৌঁছায়। পরবর্তী নিয়ম অনুযায়ী আজ সকালে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এর আগে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট ঢাকার মগবাজারের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আজহারুলকে। তাঁর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।

তাঁর আপিলের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর আপিল বিভাগ রায় দেন। এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০২০ সালের ১৫ মার্চ প্রকাশিত হয়। এরপর আজহারুল ২০২০ সালের ১৯ জুলাই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানিতে আপিল বিভাগ চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর আবেদন গ্রহণ করে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সংক্ষিপ্তসার জমা দিতে নির্দেশ দেয়। পরে তা জমা দেওয়ার পর শুনানি শেষে গতকাল, ২৭ মে ২০২৫, তাঁকে সব অভিযোগ থেকে খালাস দেন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে এই রায় সর্বসম্মতভাবে দেওয়া হয়।

রায়ে বলা হয়েছে, যেহেতু আজহারুল ইসলাম অন্য কোনো মামলা বা অভিযোগে অভিযুক্ত নন, তাই তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী আজ সকালে তাঁর মুক্তি কার্যকর হয়। মুক্তির পর জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই রায় “ন্যায়বিচারের বিজয়” এবং তাঁরা এ রায়কে স্বাগত জানায়।

আজহারুলের আইনজীবী গণমাধ্যমকে জানান, এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে তাঁর খালাস পাওয়া প্রমাণ করে, একটি ভুল রায়ের কারণে একজন নির্দোষ ব্যক্তি দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বন্দী ছিলেন। তিনি আরও বলেন, এই রায় দেশে আইনের শাসনের প্রতি আস্থা পুনঃস্থাপন করেছে।

আজহারুল ইসলাম বর্তমানে চিকিৎসার জন্য জামায়াতের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তবে তিনি শিগগিরই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে নিজ বাসায় ফিরবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

Footer Section