জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্য এক মাস সময় দেবে বিএনপি

News Desk

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্য এক মাস সময় দেবে বিএনপি. Dhakainlight.com

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের ঘোষিত সময়সীমা পুনর্বিবেচনার সুযোগ দিতে এক মাস সময় দিতে যাচ্ছে বিএনপি। দলের শীর্ষ নেতাদের বরাতে জানা গেছে, এই সময়ের মধ্যে সরকার নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না দিলে জুলাই থেকেই মাঠে কঠোর কর্মসূচি শুরু হবে। তবে এই সময় পর্যন্ত কর্মসূচি থেকে আপাতত বিরত থাকবে দলটি।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, জুলাই-আগস্টে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। এ সময়েই বোঝা যাবে, সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে কী অবস্থান নিচ্ছে। গত বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত তরুণদের সমাবেশে তারেক রহমান ও দলের অন্যান্য নেতারা নির্বাচন নিয়ে কঠোর বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁরা স্পষ্ট করে বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে—এটাই বিএনপির অনড় অবস্থান।

জানা গেছে, ঈদুল আজহার কারণে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত দলটি কোনো আন্দোলন কর্মসূচিতে যাবে না। তবে ঈদের পরপরই নির্বাচন আদায়ে নতুন রাজনৈতিক কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে, যা আগস্ট পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়া হতে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করব এবং জাতির সামনে উপস্থাপন করব। আমরা আরও কিছু সময় অপেক্ষা করব, যাতে সরকারের বিবেচনাবোধ জাগে।’

অন্যদিকে দলটির আরেক নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পলায়নের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে বিএনপির পক্ষ থেকে বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হবে। কারণ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে তৎকালীন সরকারের পতন হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী জুলাই-আগস্ট সময়টা বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে পারে। একটি পক্ষ নির্বাচন চায় ডিসেম্বরের মধ্যেই, অন্যপক্ষ বলছে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও এখনও তাঁর অবস্থানে অটল রয়েছেন—নির্বাচন হবে জুনের মধ্যেই।

বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর একাংশ ডিসেম্বরেই নির্বাচন দাবি করলেও জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দলের অবস্থানে কিছুটা ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। এই মতপার্থক্য সামনে রাজনৈতিক অঙ্গনে আরও দ্বিধা ও বিভাজন তৈরি করতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, বিএনপি ডিসেম্বরের দাবিতে অনড় থাকবে। কারণ, এই অবস্থান থেকে সরলে দলটির দুর্বলতা প্রকাশ পাবে। অপরদিকে অধ্যাপক ইউনূস শুধুমাত্র নির্বাচন করানোর জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেননি, বরং একটি নিরপেক্ষ ও সংস্কারধর্মী নির্বাচনী কাঠামো গঠনের উদ্দেশ্যে দায়িত্ব নিয়েছেন। তাই এই দ্বন্দ্বের সমাধান না হলে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।

এই অবস্থায় পুরো জাতি তাকিয়ে আছে সরকার ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত ও উদ্যোগের দিকে। আগামি আগস্ট রাজনৈতিক সমীকরণ কোন দিকে মোড় নেয়, সেটিই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের গন্তব্য।

Footer Section