দুই দিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও বন্দরের জেটিতে জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানো ও তোলার কাজ চলছে। কাস্টমসের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা সব কার্যক্রম একে একে সচল হয়ে উঠেছে।
শনিবার থেকে শুরু হওয়া এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসসহ দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এই অচলাবস্থায় পুরোপুরি থমকে গিয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম, কারণ কাস্টমসের অনুমোদন ছাড়া বন্দরের কোনো আমদানি বা রপ্তানির কাজ সম্ভব নয়। তবে রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, রাতেই কিছু কাজ শুরু হয়েছিল, তবে আজ সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে চালু হয়েছে। বন্দরের জেটিতে ভেড়ানো ‘এমভি আমালফি বে’ নামের একটি জাহাজ, যা আগে কর্মসূচির কারণে অলস অবস্থায় ছিল, সেটি থেকে এখন পুরোদমে কনটেইনার নামানো হচ্ছে। আজ সকাল পর্যন্ত ওই জাহাজ থেকে নামানো হয়েছে ৩১০টি কনটেইনার।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, কাস্টমস কর্মকর্তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করায় এখন বন্দরে কনটেইনার ওঠানো-নামানো, স্থানান্তর, এবং পণ্য খালাসসহ সব আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আগের গতিতে ফিরেছে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, দুই দিন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমদানি-রপ্তানির প্রক্রিয়ায় এক ধরনের জট তৈরি হয়েছিল। গতকাল রাত থেকেই রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন এবং জাহাজের নিবন্ধনসহ অন্যান্য অনুমোদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ সকাল থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হওয়ায় কয়েক দিনের মধ্যেই বন্দরের স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর দেশের সবচেয়ে বড় বন্দর এবং আমদানি-রপ্তানির প্রধান কেন্দ্র হওয়ায় এখানকার অচলাবস্থা সরাসরি দেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলে। ফলে এই অচলাবস্থা কাটিয়ে বন্দরের কার্যক্রম সচল হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে জমে থাকা কনটেইনার ও পণ্য খালাস করে আগের গতিতে ফেরার প্রচেষ্টা চলছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, এবং বেসরকারি ডিপোগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে, সাময়িক এ ধাক্কা কাটিয়ে কার্যক্রম খুব দ্রুতই পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।