গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা আরও বেড়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একটানা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৬ জন ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা জানাচ্ছেন, নিহতদের বেশির ভাগই উত্তর জাবালিয়ার বাসিন্দা। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখনো বহু মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে, যার ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর এমন সহিংসতা চলাকালেই মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সৌদি আরব থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, এই সংঘাতের দ্রুত অবসানের লক্ষ্যে তিনি কূটনৈতিক উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বিপরীতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, “আমরা কোনো অবস্থাতেই যুদ্ধ থামাব না।” এই অবস্থান ইঙ্গিত দেয়, সহিংসতা দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে অভ্যন্তরীণ হামলার পর থেকে শুরু হয় ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া। সেদিন হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষ জিম্মি হয়ে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেই ঘটনার প্রতিশোধের অংশ হিসেবেই ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, এখন পর্যন্ত সেখানে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫২ হাজার ৯০৮ জন ফিলিস্তিনি। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৭০০। অন্যদিকে, গাজার সরকারি মিডিয়া কার্যালয়ের তথ্য মতে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০-এর বেশি। তাদের মতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা বহু মানুষের খোঁজ না মেলায় তাদের মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
এই মুহূর্তে গাজার পরিস্থিতি মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক করিডোর চালুর আহ্বান জানাচ্ছে। তবে মাঠে এখনো যুদ্ধবিরতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।