বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের খুলনা মহানগর শাখার ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্তির মাত্র তিন দিনের মাথায় গঠন করা হলো নতুন ১২ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি। নবগঠিত এই কমিটিতে সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা নার্গিস আলীকে আহ্বায়ক এবং হালিমা আক্তার খানমকে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) রাতে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটির অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
নতুন কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন: মোসাম্মাৎ আনজিরা খাতুন, শাহানা সরোয়ার, নাসরিন শ্রাবণী, হাসনা হেনা, নিঘাত সীমা, কাওসারী জাহান মঞ্জু, মিসেস মনি বেগম, জাহানারা পারভীন, মোসাম্মাৎ সালমা বেগম ও শাম্মী চৌধুরী মলি।
কেন্দ্রীয় মহিলা দল এই আহ্বায়ক কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে ৩ মে কেন্দ্রীয় মহিলা দল খুলনা মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এর পেছনে মূল কারণ ছিল অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ। ২ মে বিকেলে খুলনা নগরের কেডি ঘোষ রোডে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দা আরিফা আশরাফি চুমকি প্রতিপক্ষের নারী কর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন।
চুমকির অভিযোগ, হামলাকারীরা ছিলেন নগর মহিলা দলের তৎকালীন সভানেত্রী আজিজা খানম এলিজার অনুসারী। তিনি খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় মহিলা দলের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
এই ঘটনার তদন্ত শেষে ৩ মে কেন্দ্রীয় কমিটি পুরো ১০১ সদস্যের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। পরদিন ৪ মে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মহানগর মহিলা দলের তিন নেত্রীকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করে খুলনা মহানগর বিএনপি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব এবং ক্ষমতার কেন্দ্র নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এই বড় ধরনের পরিবর্তনের মূলে রয়েছে। নতুন আহ্বায়ক কমিটি সেই কোন্দল নিরসনে এবং সংগঠনকে গুছিয়ে তোলার দায়িত্ব পেয়েছে।
দলীয় নেতারা আশা করছেন, নতুন কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য ও সক্রিয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে খুলনার নারী নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।
এই ঘটনাপ্রবাহ খুলনার রাজনীতিতে মহিলা দলের অবস্থান ও নেতৃত্বের সংকটকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে, যা আগামী দিনে দলটির সাংগঠনিক কৌশল ও ভবিষ্যৎ পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।