দীর্ঘ চার মাস লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার সকালে তাঁর দেশে ফেরার পর গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’র সামনে এক ব্রিফিংয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, চিকিৎসার পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভালো এবং তিনি মানসিকভাবেও স্থিতিশীল।
তিনি বলেন, “চিকিৎসার পর উনি অনেকটাই সুস্থ এবং মানসিকভাবেও ‘স্ট্যাবল’ আছেন। দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টার যাত্রার কারণে কিছুটা ক্লান্ত হলেও তাঁর সার্বিক অবস্থা ভালো। আমরা দেশবাসীর কাছে তাঁর জন্য দোয়া চাই।”
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর সরাসরি তিনি তাঁর বাসভবন ফিরোজায় যান। গাড়িবহর পৌঁছায় দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান।
খালেদা জিয়ার আগমনে দলীয় নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তাঁকে স্বাগত জানাতে দাঁড়ান বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী। জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ব্যানার-ফেস্টুন হাতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন পুরো এলাকা।
চিকিৎসকের মন্তব্য অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার জন্য কাতার সরকার যে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করেছে, সেটি ছিল সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে। ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, “কাতার সরকার এই সহযোগিতার মাধ্যমে জিয়া পরিবারের সঙ্গে তাঁদের সৌহার্দ্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।”
এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা-কর্মীদের বাসভবনের সামনে ভিড় না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “তিনি (খালেদা জিয়া) এখনও কিছুটা অসুস্থ। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে অন্তত আট ঘণ্টা সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। তাই দয়া করে কেউ স্লোগান দেবেন না, ভিড় করবেন না।”
তিনি আরও বলেন, “দলের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেন এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়। পরবর্তীতে সময় ও পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে তিনি আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন।”
খালেদা জিয়ার আগমনের পর থেকেই গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা। ‘ফিরোজা’র প্রধান ফটকে ও আশপাশে দেওয়া হয় ব্যারিকেড। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো।
উল্লেখ্য, উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসা শেষে প্রায় চার মাস পর তিনি দেশে ফিরলেন। তাঁর স্বাস্থ্যের এ উন্নতি বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নেতাকর্মীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, খুব শিগগিরই তাঁকে সক্রিয়ভাবে রাজনীতির ময়দানে দেখা যাবে। তবে চিকিৎসকদের মতে, বিশ্রাম ছাড়া কোনো কার্যক্রমে অংশ নেওয়া আপাতত সম্ভব নয়।