ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সহিংস সংকটটি এমন একটি আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা, যা একসময় যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে প্রশমিত হত। তবে, এই গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি, যা কাশ্মীরসহ অন্যান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের সীমিত কূটনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং বিশ্বের কাছে আমেরিকার নেতৃস্থানীয় ভূমিকাকে নিয়ে এক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রথম দিকে সহিংসতার বিষয়ে শালীন প্রতিক্রিয়া জানালেন, যা ভারতীয় পর্যটকদের উপর এক সন্ত্রাসী হামলার পর শুরু হয়, যেটি ভারত পাকিস্তানপন্থী মিলিশিয়াদের উপর অভিযোগ করেছে। ট্রাম্প বলেন, “এটা দুঃখজনক। আমি আশা করি এটি দ্রুত শেষ হবে।” বুধবার, তিনি কিছুটা এগিয়ে গিয়ে তাঁর সাহায্য প্রস্তাব দিলেন, তবে এতে কোনো আগ্রহের ছাপ দেখা যায়নি। “আমি দুজনের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রাখি, দুজনকেই আমি খুব ভালো চিনি, এবং আমি চাই তারা নিজেদের সমস্যা সমাধান করুক,” ট্রাম্প বলেন।
যদিও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও ভারত এবং পাকিস্তানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বৃহত্তর মার্কিন কূটনৈতিক উদ্যোগের কোনো সংকেত নেই।
এই ঘটনাটি সম্ভবত ট্রাম্প প্রশাসনের আন্তর্জাতিক কূটনীতির প্রতি উদাসীনতার প্রতিফলন হতে পারে। ট্রাম্পের মূল আগ্রহ অন্যত্র, যেমন অর্থনৈতিক বা সামরিক ক্ষমতার মাধ্যমে ছোট দেশগুলোকে আমেরিকার সুবিধায় নিয়ন্ত্রণ করা। এছাড়া, কাশ্মীরে কোনো স্পষ্ট আর্থিক বা কৌশলগত সুবিধা নেই, যা ট্রাম্পের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে।
এদিকে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসার খুবই কমে গেছে, বিশেষত আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরিয়ে যাওয়ার পর। এখন পাকিস্তান চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের উপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অতীতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাশ্মীর সংকট সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, কিন্তু এখন ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে, এবং তারা তাদের নিজস্ব পরাশক্তির সহায়তায় একে অপরকে মোকাবেলা করছে।
পাকিস্তান, যে একটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে, সম্ভবত এখন আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। তবে, যতক্ষণ না পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়, আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সমাধান লাভ করবে না।