কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় ভয়াবহ পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন এক ব্যক্তি। পরে তিনি নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। গুরুতর অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রী মারা যান। শিশু দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার বিবরণ
মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত ৯টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম মেঘলা (২৩)। তাঁর স্বামী মামুন (২৮) পেশায় একজন রংমিস্ত্রি। আহত শিশু দুটি হলো কুলসুম (৪) ও জান্নাত (২)। মামুনও বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে স্ত্রী মেঘলার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন মামুন। বিষয়টি নিয়ে পরিবারে মীমাংসার চেষ্টা হলেও মামুন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এর জের ধরেই রাতে স্ত্রী ও সন্তানদের ওপর হামলা চালান বলে প্রাথমিক ধারণা।
আত্মহত্যার চেষ্টা ও উদ্ধার
পুলিশ জানায়, হামলার পর স্ত্রী ও সন্তানদের মৃত মনে করে মামুন নিজেই গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে সবাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতাল ও পুলিশের বক্তব্য
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, “শিশুদের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করার মতো অবস্থাতেও নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, “মামুনকে আটক দেখানো হয়েছে এবং থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিক তদন্তে পারিবারিক কলহের বিষয়টি সামনে এসেছে।”
পরিবারের বক্তব্য
মামুনের মা সুফিয়া বেগম বলেন, “আমি বড় নাতনিকে নিয়ে মেয়ের বাড়িতে ছিলাম। রাতে বাড়ি ফিরে এসে দেখি সবাই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
