কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের পুশ ইন চেষ্টায় উত্তেজনা, বিজিবির বাধায় আটকালো ১৪ জন

News Desk

কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের পুশ ইন চেষ্টায় উত্তেজনা, বিজিবির বাধায় আটকালো ১৪ জন. Dhakainlight.com

কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে মঙ্গলবার ভোরে ফের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ১৪ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করলে সীমান্তে দুই বাহিনীর মধ্যে মুখোমুখি উত্তেজনা তৈরি হয়।

ঘটনাটি ঘটে ভোর চারটার দিকে, ১০৬৭ নম্বর সীমানা পিলারের নো ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী, বিজিবি ঠেলে দেওয়া ঠেকাতে গেলে বিএসএফ চারটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে গুলির কোনো পাল্টা উত্তর দেওয়া হয়নি।

জামালপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত অ্যাডজুট্যান্ট শামসুল হক জানান, বিএসএফ অবৈধভাবে পুশ ইন করার চেষ্টা করলে বিজিবি তৎপর হয়ে তা প্রতিরোধ করে। তিনি বলেন, পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিদের জাতীয়তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁরা এখনো শূন্যরেখায় অবস্থান করছেন এবং ঘটনাস্থলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন। গোলাগুলির কোনো ঘটনার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুশ ইন হওয়া ১৪ জনের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তারা নো ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা খোরশেদ আলম, ময়জুদ্দিন এবং নুরুল হক জানান, তারা নিজের চোখে দেখেছেন বিএসএফ কীভাবে লোকজনকে ঠেলে পাঠাচ্ছিল এবং বিজিবি তা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল। এই সময় চারটি গুলির শব্দ শোনা যায়।

যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, বিজিবির বাধার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে এবং বিএসএফ ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে চারটি গুলি ছোড়ে। তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসী বিজিবির পাশে অবস্থান নেয়, ফলে সীমান্তে শক্ত অবস্থান গড়ে ওঠে।

ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সতর্ক রয়েছে। স্থানীয় জনগণ এখনো আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে, যদিও বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

সীমান্তে এমন পুশ ইন ঘটনা আগেও ঘটেছে, তবে এবারের মতো সক্রিয় প্রতিরোধ এবং গুলির শব্দে পরিস্থিতি বেশি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিষয়টি এখন দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে এবং কূটনৈতিকভাবে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা।

সীমান্ত নিরাপত্তা এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে ব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন ও জনসাধারণ।

Footer Section