রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ ও খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদীতে সাঁতারের সময় পৃথক ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছে দুই শিক্ষার্থী। বুধবার বেলা ১১টার দিকে কাপ্তাই হ্রদ পার হতে গিয়ে নিখোঁজ হয় দীপেন চাকমা (১৬), আর মঙ্গলবার দুপুরে চেঙ্গী নদীতে নিখোঁজ হয় মাইশিং ত্রিপুরা (১৮)। উভয় ক্ষেত্রেই ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের সন্ধান মেলেনি।
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের ঘটনায় জানা গেছে, দীপেন চাকমা রাঙামাটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ও রাজদ্বীপ গ্রামের মহেশ্বর চাকমার একমাত্র সন্তান। আজ সকালে বন্ধুদের সঙ্গে রাজবন বিহারে ঘুরতে গিয়ে বেলা ১১টার দিকে রাজবন ঘাট থেকে রাজবাড়ি ঘাটে সাঁতার কেটে পার হওয়ার সময় হঠাৎ সে তলিয়ে যায়। তার দুই বন্ধু পার হতে পারলেও দীপেন পানির নিচে হারিয়ে যায়। স্থানীয়রা জাল ফেলে উদ্ধারচেষ্টা করে ব্যর্থ হলে বিকেল ৩টা থেকে নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
দীপেনের বাবা মহেশ্বর চাকমা বলেন, “সকালবেলা ছেলেটা রাজবন বিহারে গিয়েছিল। পরে খবর পেলাম সে কাপ্তাই হ্রদে ডুবে গেছে। সে আমার একমাত্র ছেলে।”
রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল মান্নান আনছারী জানান, “নিখোঁজ স্কুলছাত্রকে উদ্ধারে আমাদের দল নৌবাহিনী ও স্থানীয় ডুবুরিদের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান চালাচ্ছে।”
অন্যদিকে, খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদীতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মাছ ধরে ফেরার পথে নিখোঁজ হন মাইশিং ত্রিপুরা। তিনি গাছবান এলাকার অমৃতপাড়ার বাসিন্দা তপন জ্যোতি ত্রিপুরার ছেলে। বন্ধু বিন্টু ত্রিপুরা জানান, “আমরা একসঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে নদী পার হওয়ার সময় হঠাৎ প্রবল স্রোতে মাইশিং তলিয়ে যায়।”
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মুকুল কান্তি নাথ বলেন, “নদীর স্রোত ছিল খুব প্রবল। স্থানীয়রা উদ্ধার করতে না পারায় রাঙামাটি থেকে ডুবুরি দল এনে অভিযান চালানো হচ্ছে। নিখোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।”
দুইটি পৃথক ঘটনার পর পাহাড়ি অঞ্চলের হ্রদ ও নদীতে নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে সাঁতার বা পারাপার না করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস। এলাকাবাসীরাও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, শিক্ষার্থীদের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে।