কম খরচ ও সহজ ভিসার কারণে উচ্চশিক্ষায় যে ৫ দেশকে বেছে নিতে পারেন শিক্ষার্থীরা

News Desk

কম খরচ ও সহজ ভিসার কারণে উচ্চশিক্ষায় যে ৫ দেশকে বেছে নিতে পারেন শিক্ষার্থীরা. Dhakainlight.com

বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন অনেক শিক্ষার্থীর কাছেই একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। তবে জনপ্রিয় দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার মতো গন্তব্যে যেতে হলে অনেক বেশি খরচ এবং জটিল ভিসা প্রক্রিয়ার মুখে পড়তে হয়। অনেক সময় ভিসা না পাওয়ার হতাশায় পরিকল্পনাই ভেস্তে যায়। তাই অনেকেই বিকল্প ও সাশ্রয়ী দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছেন—যেখানে শিক্ষার মান ভালো, খরচ কম, এবং ভিসা পাওয়া তুলনামূলক সহজ।

এমন পাঁচটি দেশ রয়েছে, যেগুলোতে সহজ ভিসা প্রক্রিয়া ও কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ মিলছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য। দেখে নেওয়া যাক সেই দেশগুলো:

পোল্যান্ড

পোল্যান্ড ধীরে ধীরে একটি জনপ্রিয় শিক্ষাগন্তব্যে পরিণত হচ্ছে। ইউরোপের এই দেশটি শিক্ষার ব্যয় তুলনামূলকভাবে অনেক কম, এবং দেশটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও স্বাগতমূলক পরিবেশ তৈরি করেছে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, পোল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের ভিসা পাওয়ার হার প্রায় ৯৫ শতাংশ, যা অনেক উন্নত দেশের তুলনায় অনেক বেশি। ভিসা প্রক্রিয়াও সরল ও স্বচ্ছ। তাই যারা সাশ্রয়ী ও কার্যকর বিকল্প খুঁজছেন, তাদের জন্য পোল্যান্ড হতে পারে একটি চমৎকার গন্তব্য।

জার্মানি

জার্মানি উচ্চমানের শিক্ষা, গবেষণা সুযোগ এবং টিউশন ফি-ছাড়ার জন্য বিখ্যাত। দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি নেয় না।

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার হার ৯০ শতাংশের বেশি, বিশেষ করে স্টেম (STEM—বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, গণিত) বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য। এখানে পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা ১৮ মাসের পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক পারমিট পান, যা চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক। তাই যারা ইউরোপে স্বল্প খরচে মানসম্মত ডিগ্রি ও চাকরির সুযোগ চান, তাদের জন্য জার্মানি সেরা পছন্দ হতে পারে।

ফ্রান্স

ফ্যাশন, আতিথেয়তা, ব্যবসা এবং চারুকলা শিক্ষায় বিশ্বখ্যাত ফ্রান্স এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আরও সহজলভ্য হয়ে উঠছে। দেশটিতে স্টুডেন্ট ভিসার গড় গ্রহণ হার ৮৫ শতাংশ, এবং ভিসা প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে দ্রুত ও ঝামেলামুক্ত।

ফ্রান্সে ন্যূনতম ডকুমেন্টেশনেই ভিসা পাওয়া যায়, ফলে সময় ও খরচ উভয়ই সাশ্রয় হয়। এ ছাড়া দেশটিতে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগ বাড়ছে, যা বাংলাদেশিসহ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সুবিধা।

সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE)

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বিশেষ করে ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায় প্রশাসন এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষায় দেশটি অনেক উন্নতি করেছে।

এখানে স্টুডেন্ট ভিসা সাধারণত ৩০ দিনের মধ্যে পাওয়া যায় এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ৫ বছরের দীর্ঘমেয়াদি ভিসার সুবিধাও রয়েছে। ভিসা গ্রহণের হার ৭০-৮০ শতাংশের মধ্যে এবং খরচ তুলনামূলক কম হওয়ায় অনেকেই এই দেশটিকে পছন্দ করছেন। আরব আমিরাতে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাসও রয়েছে।

ফিলিপাইন

বিশেষ করে চিকিৎসাশাস্ত্র ও স্বাস্থ্যসেবা-সম্পর্কিত শিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য ফিলিপাইন একটি দারুণ গন্তব্য। দেশটির মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এবং টিউশন ফি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।

ফিলিপাইনে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার হার প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ এবং আবেদন প্রক্রিয়াও বেশ সহজ। ইংরেজি ভাষাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা থাকার কারণে বাংলাদেশসহ অনেক এশীয় শিক্ষার্থী এখানেই পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন।

শেষ কথা

উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চাইলে কেবল জনপ্রিয় দেশগুলোর ওপর নির্ভর না করে সাশ্রয়ী, নিরাপদ এবং ভিসা-সুবিধাযুক্ত বিকল্প দেশগুলোতেও নজর দেওয়া উচিত। পোল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ফিলিপাইন—এই পাঁচটি দেশ হতে পারে সেই সুযোগের দ্বার।

Leave a Comment

Footer Section