ঐকমত্যে পৌঁছাতে প্রস্তুত নাগরিক ঐক্য, ১১৮ সুপারিশে সম্মতি

News Desk

জাতীয় ঐকমত্য তৈরির প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি জানিয়েছে নাগরিক ঐক্য। আজ বুধবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে নাগরিক ঐক্য জানায়, সংস্কার কমিশনগুলোর ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে তারা ১১৮টিতে একমত হয়েছে। এছাড়া ৩৮টি সুপারিশে আংশিক দ্বিমত থাকলেও মতপার্থক্য অনেকটাই নিরসন হয়েছে। বাকি ১০টি সুপারিশে তারা আংশিক সম্মত।

বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, “আমরা চাই যত বেশি বিষয়ে সম্ভব, ঐকমত্যে পৌঁছাতে। প্রয়োজনে ছাড় দিতেও রাজি আছি।” তিনি আরও জানান, আগের বৈঠকে ১১৪টি সুপারিশে একমত হয়েছিল দলটি। আজকের আলোচনায় সেই সংখ্যা বেড়ে ১১৮-তে পৌঁছেছে।

উচ্চকক্ষ গঠনের পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের সুপারিশে উচ্চকক্ষে ৫০ শতাংশ সদস্য সিভিল সোসাইটি থেকে নেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে নাগরিক ঐক্য। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার বলেন, “যেহেতু মনোনয়ন রাজনৈতিক দল থেকেই আসবে, তখন সিভিল সোসাইটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকবে না। এতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না তারা।”

তাঁদের মতে, একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ সিভিল সোসাইটির জন্য এই বরাদ্দ বিভাজন কার্যকর হবে না। বরং এটি নাগরিক সমাজের দলনিরপেক্ষ অবস্থানকে দুর্বল করে তুলবে।

এক শতাংশ ভোট পেলেই উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বের পক্ষে

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো দল ১ শতাংশ ভোট পেলেই উচ্চকক্ষে একটি আসন পাবে—এ বিষয়টি সমর্থন করেছে নাগরিক ঐক্য। সাকিব আনোয়ার বলেন, “আমরা মনে করি, যারা সামান্য ভোট পেলেও তারা জনগণেরই প্রতিনিধি। তাদের উচ্চকক্ষে জায়গা থাকা উচিত।”

তবে কমিশনের বিকল্প প্রস্তাব, যেখানে তিন শতাংশ ভোট পাওয়ার শর্ত রাখা হয়েছিল, সেটিকে তারা অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন।

৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারে নীতিগত সম্মতি

সংবিধানের আলোচিত ৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কেও নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে নাগরিক ঐক্য। তাঁরা জানিয়েছেন, এই অনুচ্ছেদ পুরোপুরি বাতিল নয়, বরং আস্থা ভোট ও অর্থবিল ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। এই প্রস্তাবে তাদের নীতিগত সম্মতি রয়েছে।

সাম্প্রতিক এই বৈঠকটি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার পরিবেশ ও সংস্কার প্রক্রিয়ার গতি বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। নাগরিক ঐক্য জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হলো যৌক্তিক আলোচনা এবং গঠনমূলক ছাড়ের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছানো।

আপনি চাইলে এ বিষয়ক বিশ্লেষণ, ঐকমত্য কমিশনের প্রেক্ষাপট বা সংশ্লিষ্ট দলগুলোর অবস্থান নিয়েও আলাদা প্রতিবেদন দিতে পারি। চাইলে বলুন কোন দিকটা দরকার?

Leave a Comment

Footer Section