উপস্থাপনা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নানা বিতর্কের মধ্যে পরিচালক ও উপস্থাপক দেবাশীষ বিশ্বাস ফেসবুকে নিজের দায়বদ্ধতার জায়গা তুলে ধরেন। উপস্থাপকদের সৌজন্যবোধ এবং প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কথা বলতেই খল অভিনেতা মিশা সওদাগরের একটি মন্তব্য সেই আলোচনাকে নতুন মাত্রা দেয়। তিনি দেবাশীষকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘এটা তোমার কাজ নয়।’ এ মন্তব্য ঘিরে বিনোদন অঙ্গনে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।
দেবাশীষ বিশ্বাস জানান, তিনি উপস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত আছেন প্রায় ২৫ বছর ধরে, ২০০০ সালে শুরু করেছিলেন তাঁর উপস্থাপনা জীবন। এই দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, উপস্থাপনায় তারকা হয়ে ওঠা বিরল হলেও তিনি সেটি সম্ভব করেছেন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন এবং আজও সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন।
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে দেবাশীষ লিখেছেন, উপস্থাপনাকে আধুনিকতার ছোঁয়া দিতে গিয়ে তিনি কখনো কোনো অতিথির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেননি, কিংবা অবান্তর ও অশালীন প্রশ্নের আশ্রয় নেননি। ‘আলু, পটোল, বেগুন, শসা, ঝিঙে, কলা বা মুলার’ মতো অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্ন করে কখনো হাস্যকর অবস্থানে যাননি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে দেবাশীষের এই স্ট্যাটাসে মন্তব্য করে মিশা সওদাগর লেখেন, ‘তুমি মহাসমুদ্র থেকে তৈরি, সাগর। তুমি নদী–নালা খাল–বিল নিয়ে ভাবছ কেন। এটা ভাবার অনেক লোক আছে। এটা তোমার কাজ নয়। তুমি মনে রেখো, মহাসাগর থেকে তোমার সৃষ্টি। তোমার বাবার নাম দিলীপ বিশ্বাস। তুমি ইচ্ছা করলেই অনেক কিছু বলতে পারবে না, করতে পারবে না। লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার।’
মিশার এই মন্তব্যে একদিকে প্রশংসা থাকলেও অন্যদিকে রয়েছে কড়া পরামর্শ। অনেকেই মনে করছেন, তিনি দেবাশীষকে তাঁর সীমার মধ্যে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। দেবাশীষ বিশ্বাস হচ্ছেন প্রয়াত কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক দিলীপ বিশ্বাসের সন্তান, যিনি নিজেও দীর্ঘদিন ধরে উপস্থাপনা ও নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত আছেন। সেই পরিচয় মনে করিয়ে দিয়ে মিশা হয়তো বলতে চেয়েছেন, দেবাশীষের অবস্থান অন্যদের তুলনায় আলাদা, তাই তাঁকে আরও সংযত হওয়া উচিত।
এই মন্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। কেউ বলছেন, মিশার মন্তব্যে শিষ্টাচারের অভাব আছে, আবার কেউ বলছেন, তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা ও অবস্থান থেকে সতর্ক করে দিয়েছেন। অন্যদিকে, দেবাশীষ এখনো বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।
বিনোদন জগতে উপস্থাপনাকে ঘিরে যে বিতর্ক ও অসন্তোষ চলছে, সেটি থেকে বেরিয়ে এসে দেবাশীষ একটি ভিন্ন বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেটিই পরিণত হয়েছে আরেক বিতর্কের কেন্দ্রে। এখন দেখার বিষয়, এই বাক্যযুদ্ধ কীভাবে থামে কিংবা আদৌ থামে কি না।