এইচএসসি পাস করে একাদশে ভর্তি হওয়া মেহেরাবই পেলেন কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদ

News Desk

এইচএসসি পাস করে একাদশে ভর্তি হওয়া মেহেরাবই পেলেন কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদ. Dhakainlight.com

২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করা মেহেরাব হোসেন সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরের কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার জেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে মেহেরাবকে আহ্বায়ক ও আজিম হোসেনকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এই কমিটিতে মোট ২৪ জন সদস্য রয়েছেন।

তবে এই নিয়োগ নিয়ে সংগঠনের অভ্যন্তরে দেখা দিয়েছে তীব্র অসন্তোষ। কলেজ ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে এইচএসসি পাস করার পরও মেহেরাব একাদশ শ্রেণিতে পুনরায় ভর্তি হয়েছেন। দলের ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে রহস্যজনকভাবে তাঁকে পদ দেওয়া হয়েছে, যা হতাশাজনক এবং মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।”

মেহেরাব হোসেন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ছাত্র ছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি এইচএসসি পাস করে একই কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক শ্রেণির প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। তবে পড়াশোনার মাঝপথেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান, ফলে তাঁর ভর্তি বাতিল হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে ফিরে আসার পর তিনি আবারও কলেজের রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং বিএমটি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি) শাখায় একাদশ শ্রেণিতে পুনরায় ভর্তি হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ বলেন, “চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক নেতাদের পরামর্শেই এই কমিটি গঠিত হয়েছে। মেহেরাব দুঃসময়ে দলের সঙ্গে ছিলেন, তাই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়নি। এটি মাত্র এক মাসের আহ্বায়ক কমিটি। এক মাস পর সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।”

তবে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, বিএমটি ও এইচএসসি সমমানের হলেও একজন এইচএসসি পাস শিক্ষার্থীর পুনরায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া অস্বাভাবিক এবং প্রশ্নবিদ্ধ। এ বিষয়ে মেহেরাব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন এবং পরে আর কল ধরেননি।

একই দিন কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাড়াও লক্ষ্মীপুর জেলার আরও ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন ছাত্রদল কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে লক্ষ্মীপুর দারুল উলুম কামিল (আলিয়া) মাদ্রাসা, লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ভবানীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, জনতা ডিগ্রি কলেজ, লক্ষ্মীপুর পৌর আইডিয়াল কলেজ, জিল্লুর রহিম কলেজ, রায়পুর সরকারি কলেজ, রুস্তম আলী ডিগ্রি কলেজ ও হাজিরহাট সরকারি উপকূল কলেজ। এর মধ্যে কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও রায়পুর সরকারি কলেজে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের অভ্যন্তরে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার প্রশ্নে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দলের ভিতরে-বাইরে এ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।

Footer Section