ইসরাইল দাবি করেছে যে, তারা দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার আব্বাস আহমদ হামুদকে হত্যা করেছে। ইসরাইলি বাহিনী জানায়, হামলার পর তারা নিশ্চিত করেছে যে, হিজবুল্লাহর বিমান বাহিনীর অন্যতম কমান্ডার আব্বাস আহমদ হামুদ নিহত হয়েছেন। এই তথ্য প্রথমে ইরানি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজে প্রকাশিত হয়, যেখানে বলা হয়েছে যে, ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে একটি হামলা চালিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
রোববার ইরানি সংবাদ সংস্থা মেহের নিউজ জানিয়েছে, ইসরাইলের সূত্রের বরাতে, তারা দাবি করছে যে, হামুদ বিমান বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন এবং তাকে দক্ষিণ লেবাননে হামলা করে হত্যা করা হয়েছে। এই খবরটি লেবাননের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও রিপোর্ট করা হয়। তবে ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী ইসরাইল এর এই হত্যার তথ্য নিশ্চিত করলেও, নিহত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেননি। তিনি সতর্কবাণী দিয়ে বলেছেন, “আমরা কখনো আমাদের দিকে কোনো ড্রোন উড়ে আসতে দেবো না,” যা ইসরাইলের সামরিক অবস্থান এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শক্তি প্রদর্শন করে।
ইসরাইলের এই হামলার পর, আল-মায়াদিন টেলিভিশন চ্যানেল জানিয়েছে যে, দক্ষিণ লেবাননের জারজোয়া এলাকায় একটি গাড়িকে লক্ষ্যবস্তু করে ইসরাইলি বাহিনী হামলা চালায়। এতে দুজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় লেবাননে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, কারণ এটি একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান উত্তেজনার। এই হামলায় কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ছিল কি না, তা পরিষ্কার নয়, তবে এটি আরও একটি ইঙ্গিত যে, ইসরাইল হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে তার সামরিক পদক্ষেপ আরও তীব্র করতে চাচ্ছে।
এছাড়া, আরও একটি বিস্ফোরণের খবর এসেছে দক্ষিণ লেবাননের কফারকেলা শহর থেকে। সেখানে ইসরাইলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে এবং বড় একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে এই হামলায় কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ছিল কি না তা জানা যায়নি। আল-মায়াদিনের লেবানন প্রতিবেদক জানিয়েছেন যে, বিস্ফোরণটি বেশ বিশাল ছিল এবং এটি এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি করেছে।
হিজবুল্লাহ এখনও ইসরাইলের এই দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, যা সাধারণত তাদের মৌলিক কৌশল, যেখানে তারা ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে তাড়াহুড়ো করে না। তবে, তাদের মধ্যে শক্তিশালী প্রতিরোধের আভাস পাওয়া যাচ্ছে, বিশেষ করে আব্বাস আহমদ হামুদের মৃত্যুর পর তাদের প্রতিক্রিয়া দেখতে হবে। তাদের প্রতিক্রিয়া এবং ইসরাইলি বাহিনীর পরবর্তী পদক্ষেপ এই অঞ্চলের সামরিক পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে।
এদিকে, ইসরাইলি বাহিনী সাউথ লেবাননের এই হামলার পর, পুরো অঞ্চলেই তার সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। তারা কখনোই হিজবুল্লাহকে তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করতে ছাড় দেয়নি এবং তাদের সামরিক কর্মসূচি আরও শক্তিশালী করার প্রতি লক্ষ্য রেখেছে। তবে, লেবাননে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই হামলা।
এমন পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে, কারণ ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে উত্তেজনা লেবাননের সাধারণ জনগণের জন্য বিপদজনক হতে পারে। হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধের ঝুঁকি থাকায়, এটি শুধু লেবানন বা ইসরাইলের জন্য নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।