বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তাঁর সমর্থক ও সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে নগর ভবনের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা মিছিল ও স্লোগানের মাধ্যমে তাঁদের দাবির পক্ষে অবস্থান জানাচ্ছেন।
সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ অনেকেই কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশ নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সরকারের টালবাহানায় ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবির বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
নগর ভবনে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা যুক্ত হওয়ায় সব ধরনের দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সেবা নিতে আসা সাধারণ নাগরিকেরা ফিরে যাচ্ছেন। হাজারীবাগ থেকে আসা একজন বাসিন্দা জানান, হোল্ডিং ট্যাক্স জমা দিতে এসে তিনি নগর ভবনে ঢুকতেই পারেননি।
এই আন্দোলন শুরু হয় ১৪ মে থেকে। একপর্যায়ে ৪৮ ঘণ্টার বিরতির পর আবার কর্মসূচি চালু হয়। শুরু থেকে এটি বিএনপি-সমর্থিত কর্মসূচি হিসেবেই পরিচিত।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস বিজয়ী হন এবং ২ ফেব্রুয়ারি গেজেট প্রকাশ হয়। পরে তাপস মেয়র হিসেবে শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ওই ফল বাতিলের দাবিতে ২০২০ সালের ৩ মার্চ আদালতে মামলা করেন বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একই বছরের ১৯ আগস্ট মেয়রসহ সিটি করপোরেশনগুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অপসারণ করা হয়। এরপর চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন এবং শেখ তাপসকে নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করেন। নির্বাচন কমিশন ২৭ এপ্রিল সেই রায়ের ভিত্তিতে গেজেট প্রকাশ করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
তবে ইশরাকের শপথ কার্যক্রম এখনো সম্পন্ন হয়নি। নির্বাচন কমিশনের গেজেট এবং আদালতের রায়ের কার্যকারিতা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলার শুনানি চলছে। আজ সকালে আপিল বিভাগ নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা দ্রুত শপথ গ্রহণ কার্যকর করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে নগর ভবনে কার্যত অচলাবস্থা বিরাজ করছে।