আজ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস।

News Desk

‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এ দেশ নতুন করে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিবসটি উদযাপন করছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রমিক সংগঠনসমূহ। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, শ্রমিক সমাবেশ, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে দিনটি পালন করা হচ্ছে।

দিবসটি উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করেছে। সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ সিনিয়র নেতারা অংশ নেবেন। ঢাকা ও আশপাশের শিল্পাঞ্চল থেকে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক এই সমাবেশে যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

মে দিবসের সূচনা ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে সংগঠিত আন্দোলন থেকে, যেখানে বহু শ্রমিক তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। সেই আত্মত্যাগের সম্মানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে দিবসটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। অনেক দেশেই এটি বেসরকারিভাবে উদযাপিত হয়। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী শ্রমিক শ্রেণির অধিকার অর্জনের পথ সুগম হয় এবং দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায়।

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশেষ লেখা ও অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে। বিশ্বের শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে মে দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা সামাজিক বৈষম্য হ্রাস এবং শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে, শ্রম অধিকার রক্ষা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। গত বছরের ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে একটি ১০ সদস্যের শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। কমিশন বিভিন্ন অংশীজন, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন তৈরি করে, যা গত ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মে দিবস আজ কেবল ইতিহাসের এক স্মারক নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতীক। এই দিনে নতুন করে উঠে আসে শ্রমিক-মালিক অংশীদারিত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমঝোতার মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের প্রত্যয়।

Leave a Comment

Footer Section