অটিজম নিয়ে গবেষণার সময়সীমা পেছালেন ট্রাম্প প্রশাসনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি, কৃষকদের পাশে থাকার আহ্বান

News Desk

অটিজম নিয়ে গবেষণার সময়সীমা পেছালেন ট্রাম্প প্রশাসনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি, কৃষকদের পাশে থাকার আহ্বান. Dhakainlight.com

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র জানিয়েছেন, অটিজমের কারণ নির্ধারণে সরকার যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল, তা আরও ছয় মাস পেছানো হচ্ছে। যদিও তিনি এপ্রিল মাসে এক মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছিলেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই বিষয়ে পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।

সিএনএনের কাইটলান কলিন্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেনেডি বলেন, “আমরা সেপ্টেম্বরের মধ্যে কিছু তথ্য পেয়ে যাব। তবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে।” তিনি আশা করছেন, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে অটিজমের মূল কারণ জানা যাবে।

তবে অনেক বিজ্ঞানী মনে করছেন, এত কম সময়ে অটিজমের কারণ নির্ধারণ করা বাস্তবসম্মত নয়। কারণ, জেনেটিক্স এবং গর্ভকালীন সময়ে নানা পরিবেশগত ঝুঁকির মতো বিষয় নিয়েও দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা প্রয়োজন।

এদিকে ‘মেইক আমেরিকা হেলদি অ্যাগেইন’ (MAHA) কমিশনের প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন কেনেডি, যেখানে বলা হয়েছে—চাইল্ডহুড ক্রনিক ডিজিজ বাড়ার পেছনে মূলত দায়ী অতিমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাবার, পরিবেশ দূষণ এবং ওষুধের অতিব্যবহার। কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদন আগস্টে প্রকাশ করা হবে, যেখানে স্বাস্থ্য, কৃষি ও পরিবেশ সংক্রান্ত সমন্বিত কৌশল তুলে ধরা হবে।

অটিজম গবেষণায় নতুন করে ১৫টি বৈজ্ঞানিক দল গঠন করা হচ্ছে বলেও জানান কেনেডি। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যেই এসব গবেষণার জন্য তহবিল আহ্বান শুরু হবে।

এদিকে, সিনেটের এক শুনানিতে উইসকনসিনের ডেমোক্র্যাট সিনেটর ট্যামি বাল্ডউইনের সঙ্গে তাঁর উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের প্রসঙ্গও উঠে আসে। মিলোয়াকির লিড দূষণ সংকটে CDC-এর কার্যকর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাল্ডউইন। যদিও কেনেডি বলেন, CDC মিলোয়াকিকে ল্যাব ও বিশ্লেষণসহ কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

MAHA কমিশনের প্রতিবেদনে কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত কীটনাশক ও বিষাক্ত পদার্থের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পর কৃষক সংগঠনগুলো যেমন—আমেরিকান ফার্ম ব্যুরো ও ন্যাশনাল কর্ন গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন উদ্বেগ জানিয়েছে। তারা বলেছে, এ ধরনের বক্তব্য জনসাধারণের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা তৈরি করতে পারে।

এর জবাবে কেনেডি বলেন, “আমরা কৃষকদের হারাতে চাই না। কৃষকরা আমাদের MAHA এজেন্ডার মেরুদণ্ড। আমরা তাদের জন্য উদ্ভাবনী এবং কম রাসায়নিক নির্ভর পদ্ধতির সুযোগ তৈরি করতে চাই। কিন্তু আমরা কোনো ‘ন্যানি স্টেট’ হতে চাই না।”

এছাড়া প্রসেসড ফুডের তুলনায় হোল ফুড বা সম্পূর্ণ খাদ্য গ্রহণের খরচ বেশি—এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে কেনেডি বলেন, “প্রক্রিয়াজাত খাবারকে সস্তা ভাবা এক ধরনের ভ্রান্ত ধারণা। কারণ আপনি পরে তা দাম দিয়ে দেন ডায়াবেটিস, অটোইমিউন রোগ, স্নায়ুবিক সমস্যা, প্রদাহ এবং উচ্চ চিকিৎসা খরচের মাধ্যমে।”

সাম্প্রতিক বাজেট শুনানিতে দেওয়া এক বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে কেনেডি বলেন, “মানুষ আমার কাছ থেকে চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া উচিত না। আসলে, কোনো স্বাস্থ্যসচিবের কাছ থেকেও না। বরং সবাইকে উচিত নিজের গবেষণা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।” তিনি আরও বলেন, “করোনা মহামারির সময় আমরা দেখেছি, কতটা বিভ্রান্তিকর হতে পারে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য। আমার বাবা বলতেন, ক্ষমতায় থাকা লোকেরা প্রায়ই মিথ্যা কথা বলে।”

রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের এই অবস্থান ও বক্তব্য হোয়াইট হাউসে তাঁর ভূমিকা এবং বর্তমান প্রশাসনের স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার নেতৃত্বাধীন MAHA এজেন্ডা এখনো অনেক বিতর্কের জন্ম দিলেও, তা বিভিন্ন মহলে আলোচিত ও অনুসরণযোগ্য হয়ে উঠছে।

Leave a Comment

Footer Section