সুরমা নদীর এপার ভাঙছে, ওপারও ভাঙছে—যমুনা অয়েলের সিলেট ডিপো চরম ঝুঁকিতে

News Desk

সিলেট শহরের প্রাণ সুরমা নদীর দুই পারেই এবার আগাম বর্ষায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। উত্তরের আমজাদ আলী রোড থেকে দক্ষিণের খোজারখলা পর্যন্ত বিস্তৃত নদীতীর জুড়ে এখন ভয়াবহ ভাঙনের দৃশ্য। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে সিলেট নগরের বাসাবাড়ি, রাস্তা, স্থাপনা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (জেওসিএল) সিলেট ডিপো।

নদীভাঙনের কারণে খোজারখলা এলাকায় যমুনা অয়েল ডিপোর সীমানা ঘেঁষেই নদী গিলে খেতে শুরু করেছে। ঝুঁকি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে জিওব্যাগ ফেলা শুরু হলেও পরিস্থিতি এখনও অস্বস্তিকর। প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীন পরিচালক সালেহ আহমদ খসরু সরেজমিন পরিদর্শনের পর জানান, পুরো জেটি এখন হুমকির মুখে। তিনি স্থায়ী ব্লক বসানোর দাবি জানান, যাতে ডিপো রক্ষা পায় দীর্ঘমেয়াদে।

নগরের আমজাদ আলী রোড, খোজারখলা এবং কুশিঘাট এলাকায় নদীর তীব্র স্রোতের তোড়ে ইতোমধ্যে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ গজ এলাকা নতুন করে ধসে গেছে। স্থানীয়দের মতে, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আগেভাগেই ভাঙনের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

বিভিন্ন এলাকায় নদীর পার থেকে ৭ থেকে ১০ হাত দূরে থাকা দালানকোঠা ও বসতবাড়ি এখন ধসের আশঙ্কায় কাঁপছে। কুশিঘাট এলাকায় পানির তোড়ে ওয়াকওয়ে ও নদীতীর সংলগ্ন স্থাপনাও হুমকির মধ্যে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, যমুনা অয়েল ডিপোর ঝুঁকি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে ভাঙনরোধে কাজ শুরু হয়েছে। আমজাদ আলী রোড ও কুশিঘাট এলাকাতেও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, ভাঙন ও বন্যা প্রতিরোধে স্থায়ী শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। পাউবোকে বিষয়গুলো নিয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতি বর্ষায় পানি উপচে বন্যা এবং নদীভাঙন দুই মিলে তারা দিশেহারা। শহর রক্ষা বাঁধ নির্মিত হলে বহু বছরের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলেই তাঁদের আশা।

সুরমা নদীর এই আগ্রাসী ভাঙন রোধে দ্রুত, টেকসই এবং সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে সিলেট নগরের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং হাজারো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে—এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ ও সচেতন মহল।

Leave a Comment

Footer Section