সরকারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে আস্থা ভোটের পক্ষে বিএনপি ও এনসিপিসহ কয়েকটি দল

News Desk

সরকারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে আস্থা ভোটের পক্ষে বিএনপি ও এনসিপিসহ কয়েকটি দল. Dhakainlight.com

রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার ও জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত দ্বিতীয় পর্বের বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় সরকারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সংসদে আস্থা ভোটের ব্যবস্থা রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশ নেয় ৩০টি নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বর্তমান কাঠামোতে আস্থা ভোট না থাকায় সরকার পরিচালনায় জবাবদিহিতা ও স্থায়িত্বের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার যদি কোনো সময় জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে জনগণের আস্থা হারায়, তাহলে আস্থা ভোটের মাধ্যমে সেই বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া জরুরি। বিএনপি আস্থা ভোট, অর্থবিল ও সংবিধান সংশোধনের বিষয় ছাড়া অন্য সব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মতামতের পক্ষে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, সংসদের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে এবং সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা প্রতিষ্ঠায় আস্থা ভোট অপরিহার্য। তিনি মনে করেন, অর্থবিলের মতো আস্থা ভোটের বিষয়টিও সংসদ সদস্যদের অধিকার ও দায়িত্বের অংশ হওয়া উচিত।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি কোনো আস্থাহীন অবস্থার মধ্যেও চ্যালেঞ্জবিহীন থাকেন, তাহলে গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে। তিনি প্রস্তাব দেন, এ বিষয়ে দ্রুত সমাধান না করে আরও একটি আলোচনা সভার মাধ্যমে দলগুলোর মধ্যে প্রকৃত ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা উচিত।

বৈঠকে অংশ নেয়া অন্য দলগুলোর মধ্যে ছিল এলডিপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ, গণফোরাম, বাসদ, সিপিবি, ইসলামী ঐক্যজোটসহ আরও অনেক দল। অনেকেই আস্থা ভোটের পক্ষে থাকলেও কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।

আলোচনার সমাপনী বক্তব্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি করা হবে এবং আগামী জুলাই মাসে একটি ঐকমত্যভিত্তিক ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশের লক্ষ্যে কাজ চলছে। তিনি জানান, এই আলোচনা এখানেই শেষ নয়—দলগুলোর মধ্যে যেখানে মতপার্থক্য আছে, সেগুলো আরও পরিষ্কার করার জন্য আরও একাধিক পর্বে সংলাপ চালানো হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের অন্যান্য সদস্য এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, মো. আয়ুব মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য, রাজনৈতিক দলগুলোর সংবিধান, সরকারব্যবস্থা, সংসদীয় সংস্কৃতি এবং জাতীয় নির্বাচনী কাঠামোর সংস্কার নিয়ে একটি সহনশীল ও গণতান্ত্রিক ঐক্যমত তৈরি করা। এ লক্ষ্যে তারা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দল, সুশীল সমাজ, নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা করছে।

Footer Section