শরীয়তপুরে জেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীরা। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সামনে শরীয়তপুর-মাদারীপুর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে তারা অবরোধ শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টা পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ৩৫ সদস্যের শরীয়তপুর জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর পরপরই ছাত্রদলের একটি অংশ এই কমিটির বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামে। এ নিয়ে গতকালই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যাতে অন্তত ১৫ জন আহত হন।
ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে জেলা জজ আদালতের আইনজীবী এইচ এম জাকিরকে। সদস্যসচিব হিসেবে মনোনীত হয়েছেন শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল তালুকদার। কমিটিতে আরও রয়েছেন ১৬ জন যুগ্ম আহ্বায়ক ও ১৭ জন সদস্য।
কমিটি ঘোষণার পর তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে একাংশের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বিক্ষোভে নামে। আজ সকালে যুগ্ম আহ্বায়ক পান্থ তালুকদার, বাবু মাদবর, আফজাল খান, ইসহাক সরদারসহ তাঁদের সমর্থকেরা কলেজ ক্যাম্পাসে মিছিল করে বিক্ষোভ করেন এবং পরে সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন।
সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলাকালে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সাধারণ মানুষ ও যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। পরে সেনাসদস্য ও পালং মডেল থানার পুলিশ সদস্যরা现场ে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেন। বেলা দুইটার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়ার পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনকারী যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল খান জানান, ঘোষিত কমিটিতে আওয়ামী লীগপন্থী, ব্যবসায়ী, বিবাহিত ও অছাত্রদের রাখা হয়েছে। এ ধরনের বিতর্কিত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘বিতর্কিত কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, কমিটি নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করা হয়েছে যেন জনসাধারণের দুর্ভোগ হয়—এমন কর্মসূচি না দেওয়া হয়। গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি, ফলে কোনো মামলা হয়নি।
স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে এবং ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ আরও প্রকট হয়ে ওঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে।