নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ এক ছেলের শাবলের আঘাতে নিহত হয়েছেন তাঁর বাবা কবির হোসেন (৫০)। সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মির্জানগর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত কবির পেশায় কৃষক ছিলেন।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, অভিযুক্ত ছেলে মনির হোসেন (২৫) কয়েক বছর আগে সৌদি আরব থেকে ফিরে আসেন। এর কিছুদিন পর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে গেলে মনিরের মানসিক আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। প্রায়ই অস্থির আচরণ করতেন, আবার কখনো স্বাভাবিক থাকতেন। মা মারা যাওয়ার পর থেকে বাবা কবির হোসেনের সঙ্গেই বসবাস করতেন মনির।
ঘটনার রাতে ঘুমন্ত বাবাকে শাবল দিয়ে প্রথমে বাঁ হাতে কোপ দেন মনির। আহত কবির দৌড়ে পাশের জমিতে পালাতে গেলে মনির তাঁর মাথায় তিনটি আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এলাকাবাসীরা জানান, খ্যাপাটে অবস্থায় থাকা মনিরকে তখন কেউ বাধা দেওয়ার সাহস পাননি। পরে তাঁকে আটক করে সারারাত আটকে রাখা হয়।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক মো. মাসুদ মিয়া জানান, খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল থেকে কবির হোসেনের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত মনির হোসেনকে থানায় নেওয়া হয়েছে এবং তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা আরও জানান, মনিরের অস্বাভাবিক আচরণ আগে থেকেই লক্ষ করা যাচ্ছিল। এক বছর আগে দেশে ফেরার পর ছয় মাস আগে দাদি, ফুফু ও চাচাতো বোনকে কুপিয়ে জখম করেছিলেন তিনি। সে মামলায় তিন মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। এরপর থেকেই কবির হোসেন ছেলেকে নিজের তত্ত্বাবধানে রাখছিলেন।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির মাথা ও হাতে চারটি গভীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।