কাশ্মীর ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদ এবং পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকে শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের বরাতে বিবিসি জানায়, এসব হামলায় একাধিক মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাণহানি ঘটেছে অন্তত ২৬ জনের।
মুজাফফরাবাদের বাসিন্দা মুহাম্মদ ওয়াহিদ বলেন, মধ্যরাতের পর আকস্মিক বিস্ফোরণে তাঁর ঘর কেঁপে ওঠে। পাশে থাকা বিলাল মসজিদে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। একাধিক বিস্ফোরণের শব্দে এলাকা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। হামলায় নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ওয়াহিদের ভাষায়, “বিলাল মসজিদ ছিল আমাদের মহল্লার খুব সাধারণ একটি উপাসনালয়। এখানে আমরা নিয়মিত নামাজ পড়তাম। কখনো এমন কোনো কার্যকলাপ দেখিনি, যাতে এই স্থাপনাটি লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।” হামলার পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পাঞ্জাবের মুরিদকে শহরের বাসিন্দা ইউনিস শাহ জানান, ওই এলাকায় ছোড়া চারটি ক্ষেপণাস্ত্র একটি শিক্ষা কমপ্লেক্সে আঘাত হানে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি স্কুল, কলেজ, ছাত্রাবাস, একটি মসজিদ ও একটি চিকিৎসাকেন্দ্র। আশপাশের আবাসিক এলাকায় অবস্থানকারী পরিবারগুলোর মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ইউনিস শাহ বলেন, “তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র একসঙ্গে আঘাত হানে এবং কিছুক্ষণ পর আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। উদ্ধারকর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে।”
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছে, হামলায় আজাদ কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদের বিলাল মসজিদ ও কোটলির আব্বাস মসজিদ আংশিক ধসে পড়ে। পাঞ্জাবে উম্মুলকুরা মসজিদে তিনজন নিহত এবং একজন আহত হন। মুজাফফরাবাদেও প্রাণ হারান আরও তিনজন, আহত হন দুই শিশু।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আরও জানান, হামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও