পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের ফকিরের হাট-বেংহারীপাড়া এলাকায় বিদ্যুতায়িত তারে স্পৃষ্ট হয়ে তিন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন—জামিদুল ইসলাম (২২), শাহীন আলম (৪০) এবং গোলাম রাব্বানী (৩৫)। আহত ব্যক্তি জয় ইসলাম (৩০) বর্তমানে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, ফকিরের হাট এলাকার রবিউল ইসলামের ভুট্টাক্ষেত থেকে ফসল তুলতে চুক্তিতে নিয়োজিত হন ১৪ জন শ্রমিক। খেতের ওপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন থাকলেও কাজ শুরুর সময় সেখানে বিদ্যুৎ ছিল না। শ্রমিকেরা যখন কাজ করছিলেন, তখন হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে আসে। সেসময় খেতে পড়ে থাকা একটি ছেঁড়া বিদ্যুতের তারে চারজন শ্রমিক স্পৃষ্ট হন।
স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান জামিদুল ইসলাম। হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাণ হারান গোলাম রাব্বানী ও শাহীন আলম।
আহত জয় ইসলাম জানান, তারা প্রথমে তারটি দেখে সতর্ক হয়ে দূরে গিয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ গাছের পাতা থেকে শব্দ শুনে আঁচ করেন কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। ঠিক সেই মুহূর্তে তাঁর ভাই জামিদুল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে যান। তিনিও সামান্য আহত হন এবং কোনও রকমে সরে গিয়ে প্রাণে বাঁচেন।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবুল কাশেম বলেন, হাসপাতালে আনার পর তিনজনের মধ্যে দুজনকে মৃত পাওয়া যায়। একজনকে রংপুর মেডিকেলে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ হিল জামান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ লাইন থেকে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে—পল্লী বিদ্যুৎ নাকি নেসকো—তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে অনেক জায়গায় বিদ্যুতের তার ঝুলে বা পড়ে থাকে, যা একাধিকবার বলার পরেও মেরামত করা হয় না। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নিহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাশাপাশি অবহেলাজনিত এই দুর্ঘটনায় জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।