পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে ‘সুবহান আল্লাহ’ মসজিদে ভারতীয় সেনাবাহিনীর চালানো হামলায় জয়শ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর বড় বোন, বোনের স্বামী, ভাতিজা-ভাতিজি ও পাঁচজন শিশু। একই হামলায় মাসুদের চারজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীও প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানায় জেইএম।
আজ বুধবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে পাকিস্তানভিত্তিক এই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জানায়, বাহাওয়ালপুরের ওই মসজিদে ভোরবেলা ভারতীয় বাহিনী লক্ষ্য করে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। হামলাটি হয়তো ভারতীয় বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে বা দূর থেকে চালানো হয় বলে দাবি সংগঠনটির।
তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। এখনো পর্যন্ত ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি। অন্যদিকে, পাকিস্তান সরকারও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
মাসুদ আজহার ও তাঁর সংগঠন জয়শ-ই-মোহাম্মদ দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত। ২০০১ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টে হামলা, ২০১৬ সালে পাঠানকোট এয়ারবেসে হামলা এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে এই সংগঠনের নাম জড়ায়। এই হামলাগুলোর কারণে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বহুবার উত্তপ্ত হয়েছে।
২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকেই তাঁর অবস্থান গোপন রাখা হয় এবং পাকিস্তান সরকারও তাঁর ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানায়নি।
এবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে পাঁচজন শিশু থাকায় মানবিক উদ্বেগও তৈরি হয়েছে। যদিও জেইএম একে ‘ভারতের কাপুরুষোচিত হামলা’ বলে উল্লেখ করেছে, বিশ্লেষকদের মতে, এটি ভারতের পক্ষ থেকে মাসুদ আজহার ও তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের বিরুদ্ধে একটি লক্ষ্যভিত্তিক অভিযানের অংশ হতে পারে।
ঘটনার পর বাহাওয়ালপুর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। সাধারণ নাগরিকদের আতঙ্ক এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিষয়টি ঘিরে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক চাপ তৈরি হতে পারে এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আপনি চাইলে এ সংক্রান্ত আরও তথ্য, প্রতিক্রিয়া বা বিশ্লেষণ সংযোজন করে রিপোর্টটি সম্প্রসারিত করে দিতে পারি। কী ধরনের তথ্য চাইছেন?