প্রস্তাবিত বাজেটে রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত নেই, অভিযোগ বিএনপির

News Desk

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত নেই, অভিযোগ বিএনপির. Dhakainlight.com

২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত ছাড়াই ঘোষিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ বুধবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাজেট নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় দলটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে এখন গণতান্ত্রিক সরকার কিংবা কার্যকর সংসদ নেই। এমন অবস্থায় বাজেট প্রণয়নের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল দেশের রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী ও তরুণ প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া। কিন্তু সরকার তা না করে একমুখী, অংশগ্রহণহীন ও গতানুগতিক ধারায় বাজেট ঘোষণা করেছে।

বিএনপির দাবি, মূল্যস্ফীতি ‘ডাবল ডিজিটে’ পৌঁছালেও তা ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অবাস্তব। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় ২৭ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।

জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রকৃত হার ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ হলেও বাজেটে তা ৫ দশমিক ৬ শতাংশ ধরে অবাস্তব প্রত্যাশা দেখানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, সামাজিক সুরক্ষা খাতের বরাদ্দে পেনশন ও কৃষিভর্তুকি অন্তর্ভুক্ত করে বাড়তি অর্থ দেখানো হয়েছে, অথচ প্রকৃত বরাদ্দ এখনো অপর্যাপ্ত।

বিএনপি নেতা আরও বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমিয়ে সরকার দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সঙ্গে অবিচার করছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে করমুক্তির আওতায় না আনা নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, বাজেটে আর্থিক কাঠামো সংস্কারের কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই। নেই শিল্প কারখানা স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা উদ্যোক্তা তৈরির কোনো দৃশ্যমান পরিকল্পনাও। উচ্চ সুদের হার, কর ও শুল্কের চাপ উৎপাদন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং কর্মসংস্থান কমবে।

আমীর খসরু বলেন, ব্যাংক খাতের অবস্থা নাজুক, খেলাপি ঋণ আদায় বা অর্থপাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় রাজস্ব সংগ্রহে দীর্ঘ মেয়াদে ভরসা করা যাচ্ছে না। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ নিয়মিত করদাতাদের সঙ্গে বৈষম্য সৃষ্টি করছে।

ডিজিটাল ব্যবসায় শুল্ক বৃদ্ধির ফলে তরুণ উদ্যোক্তারা আরও বেশি চাপে পড়বে এবং উদ্ভাবন নিরুৎসাহিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এবং প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।

বিএনপি মনে করে, এই বাজেট বাস্তবতা বিবর্জিত, অংশগ্রহণহীন এবং অর্থনৈতিক সংকট নিরসনের সক্ষমতা নেই বললেই চলে। দলটির দাবি, জনগণের ওপর আর্থিক চাপ না বাড়িয়ে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য নিশ্চিত করার দিকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল সরকারের।

Footer Section