বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ মঙ্গলবারও নগর ভবন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর সমর্থকেরা। ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন করপোরেশনের কিছু কর্মচারী ও সাধারণ নাগরিকেরা।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করছেন, আদালতের রায়ের পরও ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানো রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাঁদের ভাষায়, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”
নগর ভবনের মূল ফটকে ১৫ মে থেকে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। এতে হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধনসহ করপোরেশনের দৈনন্দিন সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। অনেক নাগরিক প্রতিদিন ফিরে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় সেবা না পেয়ে।
একজন করপোরেশন কর্মচারী বলেন, “আমরা কাজ করতে চাই, কিন্তু জনগণের নির্বাচিত মেয়রকে দায়িত্ব না দিলে চুপ করে বসে থাকা যায় না।” গেন্ডারিয়া এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল মিয়া বলেন, “আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ইশরাক হোসেন বিজয়ী। কিন্তু একটি মহল তাঁকে দায়িত্ব নিতে দিচ্ছে না। এটি অন্যায়।”
ইসির পক্ষ থেকে গতকাল জানানো হয়েছে, তারা এখনো আদালতের পর্যবেক্ষণ বা আদেশের লিখিত কপি হাতে পায়নি। পেলে তা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন। সেই নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এরপর ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগ সরকার এবং মেয়র পদ থেকে শেখ ফজলে নূর তাপসকে অপসারণ করা হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে এবং ২৭ এপ্রিল ইসি তাঁর মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে। এরপর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ গেজেট ও রায় স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করলে সেটি ২২ মে খারিজ করে দেন আদালত। তিনি পরে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন, যা শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার নিষ্পত্তি করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে আজ বিকেল ৩টার দিকে নগর ভবনে এসে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন ইশরাক হোসেন। তার অনুসারীরা বলছেন, এটি শুধু একটি দায়িত্ব আদায়ের লড়াই নয়, এটি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের সংগ্রামের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাগরিক সেবা সচল রাখতে তাঁরা দ্রুত দায়িত্ব হস্তান্তরের দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন।