নওগাঁয় বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, দুই লাখ গ্রাহক ভোগান্তিতে

News Desk

নওগাঁয় বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, দুই লাখ গ্রাহক ভোগান্তিতে. Dhakainlight.com

নওগাঁর কাঁঠালতলী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জেলার তিনটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার ভোর চারটার দিকে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় প্রায় দুই লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েন। এর মধ্যে নওগাঁ ও সান্তাহার পৌরসভা, নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর ও বদলগাছীর বিভিন্ন এলাকা রয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ৩৩/১১ কেভি সরবরাহ লাইনে হঠাৎ গোলযোগের কারণে। বিস্ফোরণের পর উপকেন্দ্রে আগুন ধরে যায়, যা প্রায় আধা ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট। তবে ততক্ষণে উপকেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ও পাওয়ার কেব্‌ল পুড়ে যায়। এতে বন্ধ হয়ে যায় পুরো অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ।

নেসকো উত্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী তানজিমুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে রাজশাহী ও নওগাঁর বিভিন্ন টিম কাজ করছে। যেহেতু ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করতে কিছুটা সময় লাগবে। তিনি গ্রাহকদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়েছেন।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নওগাঁ-১–এর মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ জানান, পিডিবির সরবরাহ বন্ধ থাকায় পল্লী বিদ্যুতের অন্তত তিনটি সাব-সেন্টার বন্ধ হয়ে পড়েছে, ফলে দেড় লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।

এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। জেনারেটর দিয়ে কিছু সময় বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা করা হলেও তা দীর্ঘ সময় ধরে চালু রাখা সম্ভব হয়নি। গরম ও বিদ্যুৎহীন পরিবেশে রোগীদের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় নওগাঁ পৌরসভার পানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বসবাসরত বাসিন্দারা পানির অভাবে বিপাকে পড়েছেন। অনেকে সকাল থেকে একবিন্দু পানিও পাননি।

গৃহবধূ তাসলিমা খাতুন বলেন, ‘সকাল থেকে সাপ্লাইয়ের পানি আসেনি। ঘরের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে আছে। কারেন্ট না থাকলে পানি তো পাম্প হয় না। কখন যে বিদ্যুৎ আসবে, কে জানে!’

এই ঘটনার ফলে নওগাঁয় জনজীবন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভাগও তড়িঘড়ি করে কাজ শুরু করেছে। তবে কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত কিছু বলা হয়নি।

Footer Section