দুই দশকে ‘লালমাটির সবুজ ক্যাম্পাস’, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজন

News Desk

দুই দশকে ‘লালমাটির সবুজ ক্যাম্পাস’, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজন. Dhakainlight.com

পাহাড়, অরণ্য আর লালমাটির সবুজ ক্যাম্পাসখ্যাত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুই দশকে পদার্পণ করেছে। প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর পূর্তিতে আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে পালিত হচ্ছে ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’। দিনব্যাপী নানা আয়োজন, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো ক্যাম্পাসে।

২০০৬ সালের ২৮ মে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। পরের বছর, ২০০৭ সালের ২৮ মে ৭টি বিভাগে ৩০০ শিক্ষার্থী ও ১৫ জন শিক্ষক নিয়ে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান কার্যক্রম। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭ হাজার ১৩০ জন এবং শিক্ষক আছেন প্রায় ৩০০ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান কুমিল্লা নগর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে, ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ লালমাই-ময়নামতি পাহাড়ের পাদদেশে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকালে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে শুরু হয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর গোলচত্বর থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে ঘুরে আসে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে কেক কাটা ও দুপুরে আলোচনা সভা হয়। বিকেলে আয়োজন রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “শুরু থেকেই সম্ভাবনা ও সংকটের মধ্য দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে চলছে। বর্তমান প্রশাসন শিক্ষা ও গবেষণার মান বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় কুবি স্থান করে নেবে।”

জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ এমদাদুল হক জানান, “প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।”

উপাচার্য হায়দার আলী বলেন, “গৌরবের ১৯ বছর পেরিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এখন আত্মবিশ্বাসীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। গবেষণার পরিধি বেড়েছে, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।”

প্রথমদিকে ৫০ একর জায়গায় যাত্রা শুরু করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন এখন বেড়ে ২৪৪ দশমিক ১৯ একরে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সালে একনেক সভায় এক হাজার ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি মেগা প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০২২ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

প্রকল্পের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হচ্ছে ৪টি ১০ তলা একাডেমিক ভবন, দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবন, ৪টি ১০ তলা আবাসিক হল, উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষকদের আবাসন, ১০ তলা ডরমিটরি, কর্মচারীদের আবাসন, স্কুল ভবন, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, অডিটোরিয়াম, আন্তর্জাতিক কমপ্লেক্স, মেডিকেল ও ডে-কেয়ার সেন্টার, কেন্দ্রীয় মসজিদ, স্মৃতিস্তম্ভ, স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও পারিবারিক বিনোদন এলাকা। পাশাপাশি উন্নয়ন হচ্ছে অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও অন্যান্য অবকাঠামোর।

দুই দশকের এই যাত্রাপথে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণাঞ্চলের উচ্চশিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কুবি দেশের উচ্চশিক্ষা মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠার পথে রয়েছে।

Footer Section