বলছেন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ
দেশজুড়ে চলমান তীব্র দাবদাহে বাড়ছে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ।
শরীরের স্বাভাবিক তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মাধ্যমে ত্বক ঘাম ও রক্তনালির প্রসারণের মাধ্যমে গরম মোকাবিলা করে। কিন্তু দীর্ঘ সময় প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় থাকলে এই প্রক্রিয়া ভেঙে পড়ে, আর তখনই দেখা দেয় প্রাণঘাতী হিটস্ট্রোক।
হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে হিটক্র্যাম্প বা হিট-এক্সোসশন। এতে মাংসপেশিতে ব্যথা, দুর্বলতা, প্রচণ্ড পিপাসা, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম ভাব, বমি ভাব ও অসংলগ্ন আচরণ দেখা দেয়। গুরুতর পর্যায়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়, ঘাম বন্ধ হয়ে ত্বক লালচে ও শুষ্ক হয়ে পড়ে, রক্তচাপ কমে যায় এবং শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হয়।
এমন অবস্থায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ডা. আবদুল্লাহর পরামর্শ:
- হালকা, ঢিলেঢালা ও সুতির কাপড় পরিধান করা উচিত
- সরাসরি রোদ এড়িয়ে ছায়া বা ঘরের ভেতরে অবস্থান করা
- বাইরে বের হলে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করা
- পর্যাপ্ত পানি ও তরলজাতীয় পানীয় গ্রহণ করা, বিশেষত লবণসমৃদ্ধ পানীয় যেমন খাওয়ার স্যালাইন বা লাচ্ছি
- চা ও কফির পরিবর্তে ফলের রস ও বিশুদ্ধ পানি গ্রহণ করাই উত্তম
হিটস্ট্রোক দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ শীতল পরিবেশে নেওয়া, শরীর ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করা, স্যালাইন পান করানো এবং দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া জরুরি। এ অবস্থায় ঘরে বসে চিকিৎসা নয়, চিকিৎসকের পরামর্শই একমাত্র পথ।
চলমান দাবদাহে দেশজুড়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন গরমে শিশু, বৃদ্ধ ও মাঠপর্যায়ের শ্রমিকদের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।