ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মূল ভবনের সামনে আজও তালা ঝুলতে দেখা গেছে, যদিও আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন আগেই। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে গুলিস্তানে নগর ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটক বন্ধ, ভেতরে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই, আর সেবাগ্রহীতারা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটির এই মূল কার্যালয়ে কোনো কার্যক্রম চলছেনা। ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে গত ১৪ মে থেকে বিএনপিপন্থী নেতা-কর্মীদের অবস্থান এবং করপোরেশনের বহু কর্মচারীর সংহতির ফলে নগর ভবনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকেই নাগরিক সেবার মূল কার্যক্রম—জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, কর জমা, ওয়ারিশ সনদসহ প্রতিটি সেবা বন্ধ রয়েছে।
গতকাল ইশরাক হোসেন জানিয়েছিলেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নগর ভবনের অবরোধ কিছুটা শিথিল করা হবে। এতে ধারণা করা হয়েছিল, অন্তত ঈদের আগের শেষ কর্মদিবসে সেবা কার্যক্রম আংশিক চালু হতে পারে। কিন্তু আজও তালা খোলা হয়নি।
মগবাজারের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম ছেলের জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য এসেছিলেন নগর ভবনে। তিনি বলেন, ‘এর আগেও দুই দিন ঘুরে গেছি। আজও তালা দেওয়া। এভাবে মানুষকে জিম্মি করে আন্দোলন কতটা যৌক্তিক?’
করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, তাঁরা অফিস করতে এসে তালা দেখে ফিরে গেছেন। একজন নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, তাঁরা ধারণা করেছিলেন আজ অফিস খোলা থাকবে, কিন্তু নগর ভবনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা প্রশাসক কেউ উপস্থিত হননি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা না আসায় পরিস্থিতি আরও অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমানকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি, এমনকি খুদে বার্তার জবাবও দেননি।
অচলাবস্থার ফলে নাগরিক সেবা যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি সরকারি প্রশাসনেও দেখা দিয়েছে অচলতা। ঈদের আগে এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষ ও সেবাগ্রহীতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং দ্রুত সমাধান কামনা করছেন।