হলিউড তারকা টম ক্রুজ—একটা নাম, একটা ব্র্যান্ড। বয়স ৬০ পেরিয়ে গেলেও পর্দায় তাঁর প্রাণচাঞ্চল্য ও ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যগুলো দেখে কেউ বুঝতে পারবেন না তিনি ছয় দশক পার করেছেন। কখনো বিমান ধরে ঝুলছেন, কখনো পাহাড় থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ঝাঁপ দিচ্ছেন। ‘মিশন ইম্পসিবল’ সিরিজের নতুন কিস্তি নিয়ে আবারও পর্দায় ফিরেছেন এই অভিনেতা। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে হাজির হয়ে ছোটবেলার গল্প থেকে শুরু করে নিজের সিনেমা জীবনের নানা অধ্যায় শোনালেন তিনি।
শৈশবে মাত্র চার বছর বয়সেই অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন বুনে ফেলেন টম ক্রুজ। তখন থেকেই শুরু হয় তাঁর পথচলা। জানালেন, শুরুর দিকে ফিল্ম স্কুলে যাননি, বরং সিনেমা দেখে, সিনেমা বিশ্লেষণ করে আর শুটিং সেটে প্রত্যেক ক্রুর কাছ থেকে প্রশ্ন করে প্রশ্ন করেই নিজেকে তৈরি করেছেন। সিনেমার প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও আগ্রহই তাঁকে ধাপে ধাপে গড়ে তুলেছে এক নিখুঁত শিল্পী হিসেবে।

তাঁর প্রথম দিককার সিনেমা ‘ট্যাপস’-এর সময়কার অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে বলেন, তখন বুঝতেনই না কী জানেন, কী জানেন না। তবে প্রতিজ্ঞা ছিল একটাই—প্রতিদিন নিজের সেরাটা দেবেন। আর এটাই তাঁকে আজকের টম ক্রুজে পরিণত করেছে।
শুধু অভিনয় নয়, স্টুডিও ব্যবস্থাপনা, সিনেমার বিপণন কৌশল, দর্শকের চাহিদা—সবকিছু জানার চেষ্টা করেছেন তিনি। একসময় যখন ইউরোপের হলে এসি ছিল না বলে সিনেমা মুক্তি হতো না, তখন তিনিই প্রস্তাব দেন, এসি বসানো হোক—যাতে সিনেমা আরও চলতে পারে। ভাবনাগুলো ছিল সব সময় বিশ্বজুড়ে দর্শকদের নিয়েই।
একসময় স্টুডিওদের বলতেন, তাঁকে বিভিন্ন দেশে পাঠাতে। নিজেকে বলতেন, “আমি শিখতে চাই।” সে সময় মার্কেটিং টিমের কেউ কেউ তাঁকে হালকাভাবে নিত। ভাবত, ‘এই বাচ্চা ছেলেটা আবার কে?’ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই ‘বাচ্চা ছেলে’ হয়ে ওঠেন বিশ্বজোড়া সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ের নায়ক।
তিনি বিশ্বাস করেন, সিনেমা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি একটি সম্মিলিত অনুভূতি। আমরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন গল্প ও জীবন নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে আসি, কিন্তু একটি সিনেমার মধ্য দিয়ে একসঙ্গে আবেগ ভাগাভাগি করি।
‘মিশন ইম্পসিবল’ সিরিজে আবারও পর্দা কাঁপাচ্ছেন টম ক্রুজ। কিন্তু এই গল্পটা শুধু এক অ্যাকশন হিরোর নয়—এটা সেই ছোট্ট ছেলেটার, যাকে দেখে একসময় লোকে বলত, “এই বাচ্চা ছেলেটা আবার কে?” আজ সেই ছেলেটাই হয়ে উঠেছেন হলিউডের এক জীবন্ত কিংবদন্তি।