জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম জামিনে মুক্ত

News Desk

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম জামিনে মুক্ত. Dhakainlight.com

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আনোয়ারা বেগমকে জামিন দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আজ সোমবার তাঁর আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম জামিনের আবেদন করলে শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান ৫০০ টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।

গত বৃহস্পতিবার ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’-কালে হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। ষাটোর্ধ্ব ও দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় নিয়োজিত একজন নারী অধ্যাপককে কারাগারে পাঠানোয় বিভিন্ন মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে রোববার এক বিবৃতি দেয়।

জামিন আবেদনে বলা হয়, অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের বয়স ৭০ বছর এবং তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনায় ছিলেন। এ ছাড়া তিনি অসুস্থ, একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক সদস্য। এসব বিবেচনায় তাঁকে জামিন পাওয়ার উপযুক্ত মনে করা হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির আলোকে তাঁর মুক্তি চাওয়া হয়।

অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে শুনানিতে অংশ নেয়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।

আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি সূত্রাপুর থানায়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ১৯ জুলাই রায়সাহেব বাজারের কাছে স্টার হোটেলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে গুলি চালানো হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের প্ররোচনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালায়। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা চোখে গুলিবিদ্ধ হন এবং তাঁর বাঁ চোখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে।

এই ঘটনার প্রায় সাত মাস পর, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সুজন মোল্লা সূত্রাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন, যেখানে অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকেও অভিযুক্ত করা হয়। এরপর গত সপ্তাহে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।

বিচারিক প্রক্রিয়ার পর আজ জামিন পাওয়ায় তিনি কারামুক্ত হলেন। তবে মামলার তদন্ত ও বিচার চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনাটি দেশের শিক্ষাঙ্গন ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং অধ্যাপক আনোয়ারার জামিনে মুক্তি এই বিষয়ে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে।

Footer Section