শেরপুরের গারো পাহাড় এলাকায় হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসন করে হাতির জন্য একটি নিরাপদ অভয়ারণ্য গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ সোমবার সকালে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা-কাটাবাড়ি এলাকায় প্রস্তাবিত একটি পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে হাতি ও মানুষ সহাবস্থান করে, অথচ বাংলাদেশে জায়গার সংকট এবং খাবারের অভাবে বন্য হাতিরা লোকালয়ে চলে আসছে। এই সমস্যা দূর করতে হলে তাদের জন্য খাদ্য ও চলাচলের নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। হাতির চলাচলের করিডর, নিরাপদ বনভূমি ও অভয়ারণ্য নিশ্চিত করাই এখন সরকারের মূল লক্ষ্য।
দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ১২টি হাতি মারা যাওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উপদেষ্টা বলেন, “এটা কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। বহুদিনের অবহেলা ও পরিকল্পনার অভাবে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এখনই উদ্যোগ না নিলে হাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। তাই হাতি ও মানুষের মধ্যে সহাবস্থানের টেকসই সমাধান জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “কতটুকু জায়গা হাতির উপযোগী আছে এবং কতটুকু উপযোগী করা সম্ভব, সেটি আমরা যাচাই করছি। আমাদের পরিকল্পনা, হাতি যেন আর লোকালয়ে না আসে এবং কোনো প্রাণহানিও যেন না ঘটে।”
পরিদর্শনকালে পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মো. নুরুল কবীর, শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মো. মাহমুদুর রহমান, বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ রেজা খান এবং নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার।
স্থানীয় প্রশাসন এবং বন বিভাগ জানিয়েছে, এ অঞ্চলে হাতির চলাচল ও খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ করে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে, যাতে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ এবং মানবিক নিরাপত্তা—দুই দিকই নিশ্চিত করা যায়।